বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পূর্বাচলের ক্ষতিগ্রস্তদের দিকে তাকান

অসদাচরণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি রাজউকের অনুদার আচরণ শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত নয় দুর্ভাগ্যজনক। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং প্লট বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ প্রকল্পের অধিবাসীদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও নামমাত্র ক্ষতিপূরণ নিয়েই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। প্লট বরাদ্দের বদলে ভুক্তভোগীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে এ বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়েছে- উচ্ছেদের পর ক্ষতিগ্রস্তদের ‘অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে দেওয়া হয় একটি কাগজ, যা দেখিয়ে তাদের প্লট বুঝে নেওয়ার কথা। কিন্তু ওই কাগজ নিয়ে রাজউক থেকে প্লটের নম্বর আনতে গেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের গুনতে হয় ছয় থেকে আট লাখ টাকা। এ ছাড়া আমমোক্তার গ্রহণ, দলিল রেজিস্ট্রি, মালিকানা হস্তান্তর, নকশার ছাড়পত্র ও আবাসিক ঋণের ছাড়পত্র পেতেও মোটা অঙ্কের উেকাচ দিতে হয়। রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর সেলের পাশিপাশি এমআইএম শাখায় ফাইল যাওয়ার পর শুরু হয় আরেক দফা ভোগান্তি। সেখানেও নির্ধারিত ঘুষ না দিলে মাসের পর মাস ঘুরেও কোনো সমাধান পাওয়া যায় না। সব মিলিয়ে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা আর প্লট বরাদ্দ পাওয়া মানুষের কাছে ‘পূর্বাচল সেল’ এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাজউকের নতুন শহর প্রকল্পের অফিস মূল ভবন থেকে এনেক্স ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে কর্মকর্তাদের যাতায়াত কম থাকায় দালালদের ভিড়ই থাকে বেশি। ওই অফিসে এস্টেট শাখার পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, কানুনগো, এস্টেট তত্ত্বাবধায়ক, ডিলিং অ্যাসিস্ট্যান্ট মিলে এক অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ সিন্ডিকেটের বাইরে কারও কিছু বলার নেই। ফলে তাদের যথেচ্ছ আচরণের শিকার হচ্ছেন পূর্বাচল প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তরা। তারা এখন চাতকের মতো চেয়ে আছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর দিকে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মন্ত্রী বলেছেন, রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্প নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার যে স্বচ্ছতার সঙ্গে এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যকে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশা জাগানিয়া হিসেবে ভাবতে চাই। দেখতে চাই পূর্বাচলের ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিকদের সঙ্গে যারা অসদাচরণ করে সরকারের সুনাম নষ্ট করছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হচ্ছে। এটি সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর