শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দশ টাকার চাল সমাচার

লুটেরাদের নিরস্ত করুন

দেশের হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজের অভাবী মানুষের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছিল সরকার। কিন্তু সে আশার আলোকে নিভিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে আরব্য উপন্যাসের ‘থিপ অফ বাগদাদের’ এদেশীয় প্রতিভূরা। সরকারের এ মহৎ প্রকল্পটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে দুর্নীতি ও অনিয়মের অশুভ চক্র। তাদের কালো হাতের থাবায় পুরো প্রকল্পটি ভেস্তে যেতে পারে এমন আশঙ্কাও সৃষ্টি হচ্ছে। ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এ স্লোগানের মাধ্যমে সাড়া জাগানো কর্মসূচিটির সূচনা হয়েছিল গত ৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু টাউট ও বাটপারদের কারসাজিতে হতদরিদ্রদের যে তালিকা তৈরি হচ্ছে তাতে অবলীলায় ঢুকে পড়েছে ধনীদের নাম। ডিলার নিয়োগেও চলছে নানা অনিয়ম। যে কর্মসূচির বদৌলতে দেশের হতদরিদ্র মানুষের সঙ্গে সরকারের হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছিল তার বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতি হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই সৃষ্টি করছে। সংবাদ মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে কার্ড ও ডিলার নিয়োগে যে অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ পেয়েছে তাতে স্পষ্টভাবে বলা যায়, রূপকথার বাগদাদের চোরদের এদেশীয় বংশধরদের সামাল দিতে না পারলে তা সরকারের জন্যই বিড়ম্বনা ডেকে আনবে। হতাশার মধ্যে আশার আলো হয়ে উঠেছে সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে প্রধানমন্ত্রীর উচ্চারিত কঠোর হুঁশিয়ারি। তিনি সাফ সাফ বলে দিয়েছেন ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণসহ হতদরিদ্রদের তালিকা প্রণয়নে কোনো অনিয়ম বা গরমিল সহ্য করা হবে না। অনিয়ম পাওয়া গেলে ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিলসহ তালিকা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংসদ সদস্যসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকার তালিকা যাচাই-বাছাইসহ অনিয়ম খুঁজে বের করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আমরা আশা করব শুধু নির্দেশ দেওয়ার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ সীমাবদ্ধ থাকবে না। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারেও তিনি তার তদারকি অব্যাহত রাখবেন।  গরিব মানুষের জন্য কল্যাণকর এ কর্মসূচি সরকারের শিরস্ত্রাণে সাফল্যের সোনালি পালক হিসেবে বিবেচিত হবে এমনটিই আশা করা যায়। তাই কর্মসূচিটি যাতে শতভাগ স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়, তা দেখা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর