সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কুমারী পূজা

কুমারী পূজা

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মিশনে প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। কুমারী মেয়েকে মনে করা হয় সর্ববিদ্যাস্বরূপিণী। কুমারী পূজা ব্যতীত দেবতার পূজা, হোম ইত্যাদি কোনো কিছুই সফল হয় না। ভক্তদের বিশ্বাস, এর দ্বারা কোটি গুণ ফললাভ হয়, বিপদ দূরীভূত হয়; কুমারীভোজনে ত্রিলোকভোজনের ফল হয়। কুমারী পূজার দার্শনিক তত্ত্ব হলো নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ লাভ। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে যে ত্রিশক্তির বলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় ক্রিয়া সাধিত হচ্ছে, সে ত্রিবিধ শক্তিই বীজাকারে কুমারীতে নিহিত। কুমারী প্রকৃতি বা নারী জাতির প্রতীক ও বীজাবস্থা। তাই কুমারী বা নারীতে দেবীভাব আরোপ করে তার সাধনা করা হয়। এ এক মহত্তম সাধন পদ্ধতি। এ সাধনায় সাধকের নিকট বিশ্বজনীন কুমারী নারীমূর্তির রূপ ধারণ করে; তাই তার নিকট নারী ভোগ্য নয়, পূজ্যা। এ ভাবনায় ভাবিত হয়েই রামকৃষ্ণ পরমহংদেব নিজের স্ত্রীকে ষোড়শীজ্ঞানে পূজা করেছিলেন। কুমারী পূজার মাধ্যমে এ সত্যই তুলে ধরা হয়। বর্তমানে কুমারী পূজার বহুল প্রচলন নেই, তবে পুণ্যকর্ম হিসেবে কুমারীকে দানভোজনে আপ্যায়িত করার প্রথা কিছুদিন আগেও প্রচলিত ছিল। বাংলাদেশে কুমারী পূজার প্রচলন বহু আগেই ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় কুমারীপূজা প্রয়োগ নামক গ্রন্থের পুঁথি থেকে (বাংলা একাডেমী সংগ্রহ-১৫৯, লিপিকাল ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ)। বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, সিলেট, হবিগঞ্জ ও দিনাজপুরে প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজার প্রচলন আছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর