রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চীনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মদদ জোগাবে

বন্ধুদেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফর দুই দেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ককে নতুন যুগে উত্তীর্ণ করেছে। দুনিয়ার যেসব দেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এগিয়ে তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকে। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চীনকে ইতিমধ্যে উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিশ্বের সেরা অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে। সমালোচকদের মুখে ছাই দিয়ে সেই বাংলাদেশই এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান বাঘে পরিণত হতে চলেছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুবাদে। বাংলাদেশকে জোর কদমে চলার শক্তি জোগাতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সদ্যসমাপ্ত সফর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ সফরকালে দুই দেশের মধ্যে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য যেমন চীনা সহায়তা নিশ্চিত হয়েছে, ঠিক তেমনি জ্বালানি খাতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তা অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। শিল্পায়নের জন্য ইন্ধন শক্তির সহজপ্রাপ্যতা এক অপরিহার্য শর্ত। সে শর্ত পূরণে চীনা সহায়তায় দুই বড় ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে বাংলাদেশে। আশা করা হচ্ছে এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে। সস্তা শ্রমের কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ থাকলেও জ্বালানির সীমাবদ্ধতা তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু দেশ ভারত ও রাশিয়ার সহায়তায় বড় দুটি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তির পর চীনের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি এ ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতার অবসান ঘটাবে। চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চার দশক পর সে দেশের সবচেয়ে শক্তিমান নেতা বাংলাদেশ সফরে এলেন যিনি শুধু রাষ্ট্রপতিই নন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদেও অধিষ্ঠিত।  যে পদটি চীনের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হিসেবেও বিবেচিত। চীনা নেতার বাংলাদেশ সফর খুবই সংক্ষিপ্ত এবং তা ২২ ঘণ্টায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এ সময়ে দুই দেশ যেসব বিষয়ে সমঝোতায় উপনীত হয়েছে তা বিশাল পরিসরের। আশা করা হচ্ছে, এ সফর এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে অবদান রাখবে। যার প্রভাবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

সর্বশেষ খবর