রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মোটা চালের বাজারে অস্থিরতা

দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মোটা চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার শিকার। চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন মোটা চালের দাম বাড়ছে এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত ডালপালা বিস্তার করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আঙ্গুল তোলা হচ্ছে মিল মালিকদের দিকে। তাদের কারসাজিতে যে চালের দাম হওয়া উচিত ৩০/৩২ টাকা, তা এখন ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের ভোক্তা গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষ মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, চালকল মালিকরা অধিক মুনাফার আশায় মোটা চাল বাজারে না ছেড়ে মজুদ রাখায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। চালকল মালিকরা বলেছেন এ তথ্য সত্যি নয়। এ সময়ে চাল মজুদ রাখা ব্যবসায়ীদের জন্য যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ সেহেতু মজুদের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। স্মর্তব্য, চালকল মালিকরা ৬ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল সরকারের কাছে বিক্রি করবেন বলে কথা দিলেও এখনো ১ লাখ ৪০ হাজার টন চাল সরবরাহ করেননি। খারাপ আবহাওয়াকে অজুহাত দেখিয়ে এ চাল সময়মতো সরবরাহ করা হয়নি। চলতি মাসের মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার টন সরকারি গুদামে জমা দেওয়ার কড়া নির্দেশনা থাকায় নিজেদের স্বার্থেই চালকলগুলো সে চাল সরবরাহের জন্য ব্যস্ত। খোলাবাজারে মোটা চালের সরবরাহ হ্রাস পাওয়ার পেছনে যা অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সামনে যেহেতু আমনের মৌসুম সেহেতু মোটা চালের বাজারে বিদ্যমান সংকট দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে সরকারের গুদামে মজুদ রয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টন চাল। পাইপলাইনে আছে আরও দেড় লাখ টন। সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। খোলাবাজারে গরিবদের জন্য চাল বিক্রি করা হচ্ছে ১৫ টাকা কেজিতে। ফলে চাইলেও কারও পক্ষে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। বাজারে যে সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে তার পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করছে চালকল মালিকরা সরকারি চাল সরবরাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে। সাধারণ ক্রেতাদের কাছে মোটা চাল বিক্রি কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে। সরকার নির্ধারিত সময়ে চালকলের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ না করায় যে এ হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে অনুমেয়। এজন্য গরিব মানুষকে যে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তার দায় কার, তা নির্ধারিত হওয়া উচিত সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতাও কাম্য।

 

সর্বশেষ খবর