সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দারিদ্র্যমুক্তির রোডম্যাপ

সরকারকে এ চ্যালেঞ্জে জিততে হবে

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধনকালে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে দুস্থ ও হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, সরকার সবাইকে বিনা পয়সায় ঘর করে দেবে। তারা যাতে ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে সে ব্যবস্থাও করবে। দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন সঠিকভাবে দুস্থ ও হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরি করতে পারলে দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ। কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না। জলবায়ুর বিরূপ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে, সবার ঘরে আলো জ্বলবে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করে প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগে উন্নীত করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার রূপকল্প পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রতিটি সেক্টরে যেন উন্নয়ন হয় সে জন্য ব্যাপক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মাইক্রো ক্রেডিটের পরিবর্তে মাইক্রো সেভিং করে দারিদ্র্য দূর করার কৌশল বেছে নিয়েছে তার সরকার। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ‘প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্যমুক্তির যে নতুন রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন তা একদিকে যেমন আশাজাগানিয়া তেমন সরকার তথা সরকারি দল আওয়ামী লীগের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগের গত সাত বছরে দারিদ্র্যমুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের বাগ্যুদ্ধ জমে উঠেছিল, সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসাই শুধু করেননি কীভাবে এ সাফল্য অর্জিত হলো— তা নিজ চোখে দেখার জন্য বাংলাদেশ সফরেও এসেছেন। বাংলাদেশের সাফল্যকে অন্যদের জন্য অনুকরণীয় বলেও মন্তব্য করে এ প্রয়াসে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। দেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস বইছে গত সাত বছর ধরে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হওয়ায় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার রূপকল্পের বাস্তবায়ন কঠিন হলেও অসম্ভব কিছু নয়। তবে এই কঠিন কাজটি বাস্তবায়নে সরকার সফল হবে কিনা তা সরকারি দলের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

সর্বশেষ খবর