মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জনসংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা

জন্মশাসনে উদ্যোগী হতে হবে

দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে স্পুটনিক গতিতে। প্রতি মিনিটে জন্ম নিচ্ছে চারজনেরও বেশি শিশু। প্রতি বছর দেশের জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে ২২ লাখ ২১ হাজার ৮০০ মানুষ। সোজা কথায় বাংলাদেশে প্রতি বছর যে-সংখ্যক মানুষ জন্মগ্রহণ করছে তা দুনিয়ার অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ১০ লাখ। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্যাপনকালে জনসংখ্যা হবে ১৭ কোটি ১৭ লাখ। জাতিসংঘের হিসাবে অবশ্য সে সময় জনসংখ্যা হবে ১৭ কোটি ২৩ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে ২০৫০ সালে দেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি ৮৬ লাখ। বিশেষজ্ঞদের বিবেচনায়, জমি ও সম্পদের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই অনেক বেশি। বাড়তি জনসংখ্যা খাদ্য, আবাসন ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতিকে চাপের মধ্যে রাখছে। দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন জনবহুল হলেও বাংলাদেশের জনঘনত্ব অনেক অনেক বেশি। ভারতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৪৬ জন মানুষ বাস করে, চীনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১৪২ জন। আর বাংলাদেশে ১ হাজার ২০০ জন। সোজা কথায় ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে জনঘনত্ব সাড়ে তিন গুণ এবং চীনের চেয়ে সাড়ে ৮ গুণ বেশি। স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। ১৯৭১ সালে এ দেশের একজন নারী জন্ম দিত গড়ে ৬ পয়েন্ট ৪টি সন্তান, এ সংখ্যা বর্তমানে ২ পয়েন্ট ৩-এ নেমে এসেছে। দেশের মানুষ তার অস্তিত্বের স্বার্থে জন্মশাসনে মনোযোগী হয়েছে। তার পরও দুনিয়ার যেসব দেশের জনসংখ্যা অতি দ্রুত বাড়ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। জনঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে আবাসন সমস্যা বাড়ছে। এ চাহিদা পূরণে কমছে কৃষিজমি। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির চাষাবাদের কারণে গত ৪৫ বছরে কৃষিজমি কমলেও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে অন্তত তিন গুণ। জনসংখ্যা এ সময়ে দ্বিগুণের বেশি বাড়ায় ৪৫ বছর আগের চেয়ে মানুষের গড় খাদ্য গ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকাতে না পারলে একসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের শহরাঞ্চলগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। বাড়তি জনসংখ্যার জন্য শিক্ষা এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অস্তিত্বের স্বার্থে এ সমস্যা মোকাবিলায় নজর দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর