শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে

বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান কাম্য

দেশে হঠাৎ করেই সামাজিক অপরাধের মচ্ছব শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে শিশু নির্যাতনের ঘটনা। দিনাজপুরে পাঁচ বছরের এক শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বখাটেদের উৎপাত সহ্যের সীমা ছাড়াতে চলেছে। অপরাধ বিজ্ঞানীরা সামাজিক অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দায়ী করছেন পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়কে। সামাজিক অপরাধ নির্মূলে আইনকে যুগোপযোগী করার পাশাপাশি দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বলেছেন, অপরাধী যে-ই হোক, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অবাধ আকাশ সংস্কৃতিকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মোবাইল, ফোন, ইন্টারনেট, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শহর থেকে গ্রামে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ায় কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ সব শ্রেণিই সেদিকে ঝুঁকে পড়ছে। যার অনিবার্য পরিণতিতে পারিবারিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে। তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ শুধু আইনিভাবেই মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন। পাশাপাশি পুলিশিং বা আইনি ব্যবস্থাও আরও উন্নত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। যার বিচার পাওয়ার কথা, টাকা, ভয়ভীতি, রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা কারণে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইন ও বিচারব্যবস্থা সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। যে কারণে সামাজিক অপরাধ দমনে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি গণসচেতনতামূলক আন্দোলন করতে হবে। স্কুল-কলেজে নৈতিক শিক্ষার প্রচলন জরুরি হয়ে উঠেছে। স্বীকার করতেই হবে সামাজিক অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির বিষয়টি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থাতেই এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। ভোগবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ার পরিণতিতেই মানুষ নানা অপরাধ প্রবণতার দিকে পা বাড়াচ্ছে। শিশু-কিশোরীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনের পেছনেও এ অবক্ষয় জড়িত। আমরা এ কলামে বার বার বলেছি বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতারই নামান্তর। সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে বিচারহীনতা অনেকাংশে দায়ী। বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থায়ও তা ভাঙন ধরাচ্ছে।  অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশ দ্রুত এগিয়ে গেলেও আইনের শাসন এবং বিচারব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। যার অবসানে সরকার এবং সব সামাজিক শক্তির সক্রিয়তা অবশ্যই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর