শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আজানের সময় তেলাওয়াত বন্ধ রাখা

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আমরা মসজিদে আজান শুনতে পাই। আজান শুনলে জবাব দিতে হয়। তখন করণীয় কি? ফোকাহারা লিখেছেন কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতে থাকলে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত বন্ধ করে দাও। কারণ যেখানে আমি কোরআন শরিফের তেলাওয়াত বন্ধ করব, আর আজানের জবাব দেওয়ার পর আবার সেখান থেকে শুরু করতে পারব। এই সুবিধা আমার নিয়ন্ত্রণে, আমার হাতে। আজানের জবাব দিলে যে সওয়াব হয় এটা কি ছোটখাটো সওয়াব নাকি? যে আজান শোনে আর জবাব দেয়, এভাবে জীবনভর আমল করে তার ইমানী মৃত্যু নসিব হয়। ইমানি মৃত্যু নসিব হলে জান্নাতে যাবে, না জাহান্নামে যাবে? জান্নাতে যাবে। হাশরের ময়দানে রসুলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাফায়াত নসিব হবে। তো এটা কি ছোট জিনিস হলো কিন্তু শুনতে শুনতে এখন আর ভালো লাগে না আমলও করে না। যদি এমন হতো যে, আমল করতে করতে ভালো লাগে কিন্তু মন ভরে না আরও একটা আমল দিয়ে দেন। কিন্তু আমরা আমল করি না। কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতে গিয়ে বন্ধ করে আবার শুরু করা যায়। মুয়াজ্জিন আমার তেলাওয়াতের জন্য আজান বন্ধ রাখবে? যদি তেলাওয়াতে থাকি তাহলে ফাঁকে দিয়ে আজানটা চলে যাবে, জবাব দেওয়ার সওয়াব থেকে আমি বঞ্চিত হয়ে যাব। আল্লাহতায়ালা বড় রহমান, বড় রহিম। যে মুরব্বি হয় সে বুঝে সন্তান, ছাত্র, মুরিদের জন্য লাভ কি? হয়তো সে বুঝতেছে না! কিন্তু আল্লাহতায়ালা সব জানেন, সব বোঝেন। আমি কী ধরনের আমল করব কষ্টের আমলগুলো কতটুকু করতে পারব তিনি জানেন। মা-বাবা সন্তানকে ছোট ছোট সহজ কাজ দেন, কঠিন কাজ দিলে পারবে না, আল্লাহতায়ালা জানেন যে ওরা বড় বড় আমল করতে পারবে না, অধিক পয়সা খরচের আমল কঠিন হবে, শারীরিক শক্তির আমল কঠিন হবে, সময় দিতে পারবে না, কোরআন শরিফ তেলাওয়াতরত অবস্থায় যদি আজান শোন তবে তেলাওয়াত বন্ধ করে জবাব দেবে। এতে একটা লাভ হলো, আমি ফেরেশতাদের বলব এরা কোরআন শরিফ পড়ে, কোরআন শরিফ পড়তে স্বাদ পায়। কিন্তু আমি যেহেতু বন্ধ করতে বলেছি এ জন্য বন্ধ করে রেখেছে, এরা আমাকে খুব মানে। আবার বলেছি যে, তোমরা যদি আজান শুনতে পাও তাহলে জবাব দেবে। ওরা জাবাব দিচ্ছে, আমার দুটি হুকুম মানল। শয়তান আমার হুকুমের বিরোধিতা করেছে তাই রহমত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর আদম (আ.) আমার হুকুমকে মেনেছে এবং তাই পৃথিবীতে প্রথম নবী হয়েছে।  এরা তো আজানের সময় দুটি হুকুম মানল। সুতরাং তাদের এ জবাবকে লিখে রাখ।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

সর্বশেষ খবর