শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গণপরিবহনে নৈরাজ্য

প্রশাসনের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

প্রশাসনকে জিম্মি করে গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকরা যা ইচ্ছে তাই করার স্বাধীনতা ভোগ করছে। সারা দেশে তো বটেই, এমনকি রাজধানীর সড়কেও অবাধে চলাচল করছে ফিটনেসহীন লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন। লাইসেন্স নেই এমন চালকরাও যানবাহন চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের তারা সব কিছু না দেখার ভান করছেন। ট্রাফিক পুলিশের সব তত্পরতা ব্যক্তিগত বিভিন্ন যানবাহনকে কেন্দ্র করে। সেখানে পান থেকে চুন খসলেই মামলা করা হয়। উেকাচ দিলে ভুক্তভোগীদের সে ভোগান্তি থেকে রেহাই দেওয়া হয়। গণপরিবহনের যারা মালিক তারা রাজনৈতিকভাবে প্রচণ্ড প্রভাবের অধিকারী। ফলে জেলা প্রশাসন তাদের দিকে হাত বাড়াতে ভয় পায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তারা সে পথে এগোন না। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনে যথেচ্ছার শেষ নেই। হালকা যানের লাইসেন্স নিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি চালাচ্ছেন এমন চালকের সংখ্যা অসংখ্য। দুর্ঘটনার নামে একের পর এক হত্যাকাণ্ডও তারা ঘটিয়ে চলছে। তারপরও পার পেয়ে যাচ্ছে পরিবহন মালিকদের দাপটের কারণে। শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে ক্ষমতাধর মন্ত্রীরা জড়িত থাকায় তাদের বাড়াবাড়ি সীমা অতিক্রম করতে চলেছে। রাজধানীতে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেট কারকে হার মানিয়ে গণপরিবহন যানজট সৃষ্টির প্রধান কারণে পরিণত হয়েছে। যাত্রী নেওয়ার জন্য যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যানজট সৃষ্টি করা হয়। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সেদিকে নজর দেওয়ার কোনো চেষ্টাই করেন না। পরিবহন শ্রমিক বিশেষত বাসের ড্রাইভার, হেলপার, কন্ডাক্টররা প্রকাশ্যেই বলে তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে গাড়ি চালায়। তাদের কেউ নাজেহাল করলে চাঁদা পাওয়াই বন্ধ হবে। রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনে যে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা চলছে তাতে লাগাম পরাতে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের কাছে প্রশাসন জিম্মি হয়ে পড়ায় সরকারের সুনাম যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে তা কোনো সুখবর নয়। এ বিষয়ে কর্তাব্যক্তিদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর