শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হ্রাস পাচ্ছে বন্যপ্রাণী

জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে যত্নবান হতে হবে

বিশ্বে গত সাড়ে চার দশকে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৫৮ শতাংশ কমেছে। প্রতিবছর কমার পরিমাণ ২ শতাংশ, এ হারে কমতে থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়ার্ল্ড জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের যৌথ গবেষণাপত্রে। এতে বলা হয়, ১৯৭০ সালের পর থেকে বিশ্বে ৫৮ শতাংশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে গেছে। এর মধ্যে নদ-নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে থাকা জীবজন্তুই বেশি পরিমাণে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এ জন্য গবেষকরা মানবিক তত্পরতা বৃদ্ধি, আবাসস্থল ধ্বংস, বন্যপ্রাণী ব্যবসা, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কারণগুলোকে দায়ী করেছেন। গবেষণাপত্রে তিন হাজার ৭০০ ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির পাখি, মাছ, স্তন্যপায়ী প্রাণী, উভচর ও সরীসৃপের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণার আওতায় আসা এই সংখ্যা পৃথিবীর মেরুদণ্ডী প্রজাতির মোট সংখ্যার ৬ শতাংশ। গবেষণায় বলা হয়, ১৯৭০ সালের পর থেকে কেবল মিঠা পানির প্রজাতিই কমেছে ৮১ শতাংশ। এর সঙ্গে পানির অপব্যবহার, বাঁধের মতো বড় বড় স্থাপনা তৈরি করে মিঠা পানির শৃঙ্খলা পর্যুদস্ত করার সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় আফ্রিকান হাতির ওপর আলোকপাত করে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই প্রজাতির হাতি মারাত্মক সংকট মোকাবিলা করছে। শিকার বেড়ে যাওয়ায় তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। একই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে হাঙর। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ মেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রজাতির হারিয়ে যাওয়ার পরিমাণ দাঁড়াবে ৬৭ শতাংশ বা দুই-তৃতীয়াংশ। বিশ্বে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ার ঘটনাটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। দুনিয়ার যেসব দেশ থেকে দ্রুত হারে বন্যপ্রাণী হ্রাস পাচ্ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। এক সময় ঢাকার বন এলাকায় ছিল বন্যহাতির আনাগোনা। ঢাকার বনেও ছিল বাঘসহ নানা জাতীয় প্রাণী। আজ তা ইতিহাসের অংশ হয়ে পড়েছে। বনাঞ্চলের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য বন্যপ্রাণী উধাও হয়ে গেছে। দেশের নদ-নদী থেকেও উধাও হতে চলেছে মিঠা পানির কুমির, ডলফিনসহ নানা প্রাণী। স্থলভাগে কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনা যেমন শূন্যতার সৃষ্টি করেছে তেমনি নদী দূষণের কারণে অনেক জলজ প্রাণী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হলে এ বিষয়ে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর