রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থনীতিতে সাফল্য

সুশাসনেও যত্নবান হতে হবে

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের পর বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের বৃহত্তম এই দাতা সংস্থার মনোভাবে ইতিবাচক পরিবর্তনের ছটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অর্থ বিভাগে পাঠানো বিশ্বব্যাংকের এক পর্যবেক্ষণপত্রে অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রশংসা করা হয়েছে অকৃপণভাবে। বলা হয়েছে, বন্যা-খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম। ২০১০ সালের বিশ্বমন্দায়ও এ দেশের অর্থনীতি খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বলে অভিহিত করা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি সব ধরনের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে রপ্তানি আয়। প্রবাসী আয়ের গতি সামান্য কমলেও রপ্তানির বিপরীতে আমদানি কমায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়তই বাড়ছে। যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী হয়ে উঠছে ও আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। স্মর্তব্য, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে বাংলাদেশ যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, তা খুব সম্ভাবনাময়। এ জন্য প্রয়োজন সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা। উন্নয়নকে টেকসই করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন যে অত্যন্ত জরুরি সে বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেছিলেন বাংলাদেশের নেতাদের কাছে। বলেছিলেন, এক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ব্যাহত হতে পারে সরকারের নেওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রত্যাশা। বিশ্বব্যাংক সভাপতি বাংলাদেশের মানুষের সৃষ্টিশীলতা এবং কর্মঠ মনোভাবের প্রশংসা করেছিলেন উদারভাবে। বলেছিলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, প্রশাসনিক সংস্কার, দুর্নীতি কমিয়ে আনা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার যে প্রেসক্রিপশন  বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় তা খুবই তাত্পর্যের দাবিদার।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশনের যথার্থতা নিয়ে গ্রহীতা দেশগুলোর মধ্যে  প্রশ্ন থাকলেও নিজেদের স্বার্থেই যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে সে বিষয়ে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর