রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা

অপরাধীদের খুঁজে বের করতেই হবে

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ডিজিটাল দুর্নীতি পরীক্ষার উদ্দেশ্যকেই গলা টিপে হত্যা করছে। এ দুর্নীতির বদৌলতে সত্যিকারের মেধাবীদের বদলে জালিয়াতের মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, যা শুধু উদ্বেগজনকই নয়, দুর্ভাগ্যজনকও বটে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর ৪২ মিনিট বা তার আগে পৌঁছে যায় শিক্ষার্থীদের কাছে উত্তর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জালিয়াতির অভিযোগে নয়জন ভর্তি পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তরও করেছে। তাদের কাছে মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস পাওয়া যায়। তবে মূল অপরাধী অর্থাৎ যারা তাদের প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করেছে তারা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের কারণে অসাধু কিছু শিক্ষার্থী উপকৃত হলেও বিপাকে পড়ছেন মেধাবী ভর্তিচ্ছুরা। সন্দেহ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো অসাধু শিক্ষক, কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীর সহায়তায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে চলে যাচ্ছে জালিয়াত চক্রের হাতে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের উচ্চশিক্ষার ভিতকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে। সত্যিকারের মেধাবী যারা তাদের বদলে নকলবাজরা ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় ভর্তি পরীক্ষার মাহাত্ম্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সুনামের স্বার্থেই প্রশ্নপত্র কীভাবে ফাঁস হচ্ছে, এর হোতা কারা তা খুঁজে বের করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি এ ধরনের দুর্নীতি রোধে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সত্যিকারের যোগ্য লোকদের বদলে স্বজনপ্রীতি কিংবা দলপ্রীতি প্রাধান্য পাওয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে অযোগ্য এবং দুর্নীতিবাজরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাচ্ছে এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসনের ব্যত্যয় হলে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ এ ধরনের দুর্নীতি চলতেই থাকবে। এই নৈরাজ্যের অবসানে সংশ্লিষ্ট সবার সতর্কতার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর