রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্রোধ থেকে দূরে থাকা রসুলের সুন্নাত

মাওলানা মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন

ক্রোধ বা আক্রোশ মানুষের স্বাভাবিক চেতনাকে কেড়ে নেয়। মানুষের বিবেককে জিম্মি করে ক্রোধ। সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনা লোপ পায় ক্রোধ নামের অপগুণের কবলে পড়ে। ক্রোধ মানুষের মধ্যে অকারণ ঘৃণাবোধের সৃষ্টি করে। প্রতিহিংসাপরায়ণতায় উদ্ভব ঘটায়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্রোধকে ইমান বিধ্বংসী বলে এই অপগুণ সম্পর্কে উম্মতদের সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন। মহান আল্লাহর নবী ইরশাদ করেছেন, সিরকা যেভাবে মধুকে বিনাশ করে সেভাবে ক্রোধ ইমানকে নষ্ট করে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে ক্রোধ থেকে দূরে থেকেছেন। সাহাবিদের এই অপচর্চা থেকে সতর্ক করেছেন। ক্রোধ থেকে দূরে থাকা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত।

নিজেদের ইমানদার হিসেবে দাবি করতে হলে, নিজেকে মুমিন হিসেবে দেখতে চাইলে ক্রোধ থেকে দূরে থাকতে হবে। ক্রোধ সংবরণের সদগুণ আয়ত্ত করতে হবে।

একবার এক সাহাবি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে আবেদন জানালেন, ‘হে আল্লাহর রসুল, আপনি আমাকে একটি ভালো কাজের নির্দেশ দিন।’ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘তুমি রাগ করবে না।’ (বুখারি)।

ক্রোধ থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে আল্লাহর রসুল আমাদের কতটা তাগিদ দিয়েছেন উপরের হাদিস তারই প্রমাণ। অনেকে ক্রোধ দেখানোকে নিজের শক্তিমত্তা প্রকাশের উপায় বলে ভাবেন। এ ভাবনায় রয়েছে মহা ভুল। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধারণাকে নাকচ করে দিয়েছেন। আল্লাহর রসুল বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে খুব কুস্তি লড়তে পারে। বরং প্রকৃত শক্তিশালী হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

মানুষ ক্রোধে আক্রান্ত হলে তার স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার এই বিপথগামিতায় শয়তান খুশি হয়। শয়তানকে খুশি করতে না চাইলে ক্রোধ সংবরণের চেষ্টা চালাতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, শয়তান আগুনের তৈরি। পানি আগুনকে ঠাণ্ডা করে। যদি কারও ক্রোধ হয় তবে তার উচিত অজু করে নেওয়া। (বুখারি ও মুসলিম)।

ক্রোধে আক্রান্ত হলে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে গজব নেমে আসে। সাহাবি হজরত ইবনে উমর (রা.) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানতে চাইলেন, এমন কোনো কাজ আছে কি যা আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করবে?  তিনি বললেন, ‘তুমি রাগ দেখাবে না।’  (বুখারি)।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর