সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঋণ লোপাটের মচ্ছব বন্ধ হোক

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রশংসনীয়

ব্যাংকে যে টাকা সঞ্চয় হয় তা দেশের সাধারণ মানুষের টাকা। এ টাকা লুণ্ঠনের মচ্ছব চলছে বছরের পর বছর ধরে। প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করার মাধ্যমে। ব্যাংক কর্মকর্তা এমনকি পরিচালকদের যোগসাজশে একদল লুটেরা ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়ে তা লোপাট করছে। লুণ্ঠিত এ অর্থের এক বড় অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। দেশের অর্থনীতিকে এ  পাচারের ধকল সইতে হচ্ছে। এ লুটপাটের অবসানে দেরিতে হলেও কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভুয়া দলিল দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বন্ধে তারা এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে। এখন থেকে ঋণগ্রহীতার জামানত হিসেবে যে জমি দেখানো হবে তার দলিল, দাগ নম্বর, খতিয়ান, জমির পরিমাণ সব তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে ঋণদাতা ব্যাংকগুলোকে। খেলাপি না হলেই ঋণ দাও— এ নীতিতে এখন থেকে আর কাউকে ঋণ দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। জাল দলিলের পাশাপাশি দলিল ঠিক হলেও একই দলিল দিয়ে একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ঘটনাও অহরহ ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যাতে খেলাপি ঋণের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ঋণগ্রহীতা যে সম্পদ জামানত হিসেবে দেবে তার দাগ নম্বর ও খতিয়ানসংক্রান্ত তথ্যও যেন সংগ্রহ করে। এর ফলে ভুয়া জামানত বা একই দলিল দেখিয়ে একাধিক ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নেওয়া বন্ধ হবে। স্মর্তব্য, ভুয়া দলিলপত্র দাখিল করে ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা লোপাট করেছে হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপের মতো জালিয়াত প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক থেকে সাধারণ মানুষ কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এক লাখ কিংবা তার চেয়ে কম টাকা ঋণ নিতে গেলেও তাদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়। দিনের পর দিন ব্যাংকের দ্বারে ঘোরার ঘটনাও ঘটে। অথচ জালিয়াত প্রতিষ্ঠানগুলো ভুয়া দলিল দেখিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ পায়। এ লুণ্ঠন বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা নিঃসন্দেহে প্রশংসার। আমরা আশা করব এ নির্দেশনা যাতে যথাযথভাবে পালিত হয় সেদিকেও নজর রাখা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর