বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চালবাজি শেষ হোক

দুর্নীতিবাজদের পাকড়াও করুন

হতদরিদ্রদের দশ টাকা কেজির চাল নিয়ে চালবাজি কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত দুর্নীতির খবর প্রকাশ পাচ্ছে। দুর্নীতি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও চোরার দল ও চাটার দলের বেপরোয়া মনোভাবে বাদ সাধা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল সরবরাহের কর্মসূচি গরিব মানুষের খুব একটা কাজে লাগছে না। বিতরণকৃত চালের বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে বিত্তবানদের পকেটে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় রাজনৈতিক টাউটরা নানা কৌশলে ১০ টাকা কেজির চাল আত্মসাতের চক্রান্তে লিপ্ত হচ্ছে। হতদরিদ্রদের বদলে রাজনৈতিক দলের টাউট নেতা-কর্মী, চেয়ারম্যান, মেম্বারদের নামেও কার্ড বরাদ্দ করা হয়েছে। হতদরিদ্রদের মধ্যে যারা ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড পেয়েছেন তাদের অনেকের কাছ থেকে উেকাচ নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে এ কর্মসূচির কোনো দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে হতদরিদ্রদের তালিকা পরীক্ষা করে তাতে অবস্থাপন্নদের নাম থাকলে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্নীতির সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্দেশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের, তাদের কারও কারোর সঙ্গে চাল চোরদের সম্পর্ক গড়ে ওঠার কাঙ্ক্ষিত সুফল অর্জিত হচ্ছে না। ফলে যে কর্মসূচির বদৌলতে ইতিহাসে বর্তমান সরকারের নাম স্বর্ণাক্ষরে থাকার কথা, সে কর্মসূচির অব্যবস্থাপনার জন্য তাদের সমালোচিত হতে হচ্ছে। আমরা এ কলামে একাধিকবার বলেছি নিজেদের স্বার্থেই ১০ টাকার কেজি চাল বিতরণের কর্মসূচির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পেতেই সরকারকে লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি এ ক্ষেত্রে সরকারি দল এ যাবৎ সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণের কর্মসূচিতে যে শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে তার প্রায় সবটুকুই অপচয় ঘটছে। যা বন্ধ না হলে এ কর্মসূচির ফসল সরকারের ঘরে না গিয়ে দুর্নামই শুধু সঞ্চিত হবে। যা না চাইলে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর