শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জবরদখলকৃত জমি উদ্ধার

ঢাকা উত্তর সিটির প্রশংসনীয় পদক্ষেপ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আইয়ুবী আমলের ছোট লাট মোনেম খানের পরিবারের অবৈধ দখল থেকে বনানীর ১০ কাঠা জমি উদ্ধার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনেম খানের পরিবার অবৈধভাবে ৫০ বছর ধরে এ জমি ভোগদখল করছিল। সম্প্রতি এ জমিটি দখলমুক্ত করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাগাদা দেওয়া হলেও সাবেক ছোট লাটের উত্তরসূরিরা তাতে পাত্তা দেয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টার অভিযানে অবৈধ দখলদারদের  উচ্ছেদ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই উচ্ছেদ অভিযান নানা কারণে তাত্পর্যের দাবিদার। পাকিস্তান আমলে আইয়ুবের সামরিক স্বৈরশাসনের দোসর ছিলেন গভর্নর মোনেম খান। বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন দমনে তিনি ছিলেন তার প্রভু আইয়ুব খানের চেয়েও এক কাঠি এগিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে ভূমিকা রাখেন এই সাবেক ছোট লাট। মুক্তিবাহিনীর হাতে তিনি নিহত হন এক সফল অভিযানে। সেই পাকিস্তান আমল থেকে বনানী ২৭ নম্বর সড়কের ১০ কাঠা জমি কোনো দলিলপত্র ছাড়াই সাবেক ছোট লাটের পরিবারের দখলে থাকলেও এ যাবৎ কোনো সরকারি সংস্থা তা উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়নি। বিমানবন্দর সড়ক ও বনানী ২৭ নম্বর সড়কের সংযোগস্থলে ২০২ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩৬ ফুট প্রস্থের জায়গাটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নকশা অনুযায়ী সবুজ বেষ্টনীর আওতাভুক্ত। রাজধানীসহ সারা দেশে রেলওয়ে, সড়ক ও জনপথ এবং বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের বিপুল পরিমাণ জমি অপদখলে আছে। লুটেরারা এসব জমি অবৈধভাবে ভোগদখল করছে বছরের পর বছর ধরে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র বিভিন্ন সংস্থার জমি উদ্ধারে একটি কমিশন গঠনের দাবি করেছেন।  আমরা স্বাধীনতাবিরোধী মোনেম খানের পরিবারের অবৈধ দখল থেকে সরকারি জমি উদ্ধারকে স্বাগত জানাই, একইভাবে অবৈধ জমি উদ্ধারে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হকের প্রস্তাবকেও সমর্থন জানাতে চাই। জনগণের সম্পত্তি লুটপাট কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়।  লুটেরাদের থাবা থেকে সরকারি জমি উদ্ধারে প্রশাসন যত্নবান হবে এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর