শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইউরিয়ায় অশনি সংকেত

সংকট মোচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন

ইউরিয়া সার উৎপাদনের ছয়টি কারখানার পাঁচটিতে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ থাকায় আসন্ন কৃষি মৌসুমে দেশে সার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) আশঙ্কা, দীর্ঘ সময় ধরে পাঁচটি কারখানা বন্ধ থাকায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ লাখ টন সার কম উৎপাদন হতে পারে। বিসিআইসি বলেছে, এপ্রিল থেকে পাঁচটি কারখানা বন্ধ থাকায় যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ। এ সমস্যার সমাধানে তারা ডিলার পর্যায়ে সারের দাম স্থির রেখে টনপ্রতি চার হাজার টাকা ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে। দেশের সার কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে গ্যাস সংকটের কারণে। সার উৎপাদনে বিপুল পরিমাণ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। উৎপাদন অপর্যাপ্ত হওয়ায় সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হলে অন্যান্য শিল্পের ওপর তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। যে কারণে প্রতি বছরই সার কারখানায় উৎপাদন কয়েক মাস বন্ধ রাখা হয়। কৃষকদের চাহিদা মেটাতে ইউরিয়া সার আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে। এ সার কৃষকদের বিতরণের ক্ষেত্রে টনপ্রতি ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। বিসিআইসি তাদের চিঠিতে বলেছে, উৎপাদিত সারের ক্ষেত্রে চার হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হলে প্রতি টনে অন্তত ৮ হাজার টাকা পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। সবারই জানা, কৃষি উৎপাদনে ইউরিয়া সার অন্যতম উপাদান। সন্দেহ নেই দেশের সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ নিয়ে সরকার শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থায় পড়েছে। দেশে পর্যাপ্ত সার উৎপাদিত না হলে চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হবে। উৎপাদন বন্ধ রাখার পরিণামও যে নেতিবাচক তা সহজে অনুমেয়। এতে সার কারখানার কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে অন্যান্য শিল্প কারখানায় গ্যাস বন্ধ রেখে সার কারখানা চালু রাখার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। আমরা আশা করব অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বুঝেশুনেই যুৎসই সিদ্ধান্ত নেবে।  কৃষকরা যাতে সংকটে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে আমদানির মাধ্যমে হলেও সারের জোগান ঠিক রাখা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর