মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থনীতির পাঁচ ঝুঁকি

টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে সতর্ক হতে হবে

বাংলাদেশের উচ্চমাত্রার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমীহের চোখেই দেখছে বিশ্বব্যাংক। দারিদ্র্যমুক্তির লড়াইয়ে তারা বাংলাদেশের সাফল্য অন্যদের জন্য অনুকরণীয় বলেও মানতে রাজি। তবে টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যেসব ঝুঁকি রয়েছে তা মোকাবিলার জন্য বার বার তাগিদ দিয়ে চলেছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ মুহূর্তে পাঁচটি ঝুঁকি রয়েছে। এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারকে তারা কিছু পরামর্শও দিয়েছে। ঝুঁকিগুলো হলো— বিনিয়োগে দীর্ঘায়িত মন্দা, ব্যবসার পরিবেশ উন্নত না হওয়া, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মানে অবনমন এবং বহির্বিশ্বে নতুন রপ্তানি ও শ্রমবাজার অনুসন্ধান করা। গত মাসে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে। মোড়ল দাতা সংস্থাটি বলছে, এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারলে চলতি অর্থবছর শেষে বাজেটের কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় থেকে সাত বছর ধরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। অবকাঠামো সমস্যা, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট এবং ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের আস্থাহীনতায় বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। বিশ্বব্যাংক অর্থনীতির যে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছে, তাতে শুধু সতর্ক হওয়া নয়, কীভাবে ঝুঁকি রোধ করা যায় সে বিষয়েও তত্পর হতে হবে। উচ্চতর প্রবৃদ্ধির জন্য গর্ব করা গেলেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যক্তি খাতের আস্থা বাড়ছে না। গত তিন বছরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ মোট জিডিপির সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৮ শতাংশে অবস্থান করছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি কমেছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষেও রেমিট্যান্সের প্রবাহে নেতিবাচক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্যেও স্বীকার করা হয়েছে। এ পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে। বিনিয়োগের বাধা দূর করার পরামর্শও দিয়েছে তারা। ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামর্থ্য সম্পর্কে দাতা সংস্থার মধ্যেও সংশয় নেই। স্বভাবতই প্রশ্ন হলো সরকার তা মোকাবিলায় কতটুকু প্রত্যয়ী হবে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতির স্বার্থে এ বিষয়ে নজর দেওয়া হবে এমনটিই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর