শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আজানের সঠিক জবাব দিতে হবে

আল্লামা মাহমূদুল হাসান

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম কানে এলে তার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি প্রদর্শনস্বরূপ বলতে হবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আর যদি না বলে কেউ সে ধ্বংস হয়ে যাক হজরত জিব্রাঈল (আ.) আল্লাহর রসুলকে বললে তিনি বলেন ‘আমিন’। আমরা এটার গুরুত্ব দিই না। মহানবীর নাম শুনলে কী পড়তে হবে? সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তবে কিছু জায়গা ব্যতীত যেমন নামাজের মধ্যে তাশাহুদ পড়তে হয় সেখানে আল্লাহর রসুলের নাম আসে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসুলুহ্।’ তখন কী করবেন? আপনারা দরুদ শরিফ পড়া আরম্ভ করে দেবেন? যদি আপনি বলেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হবে না। তাতে বোঝা গেল আমল যে করতে হবে এটার একটা তরিকা আছে। তরিকা মতো করতে হবে। আল্লাহ রসুলের নাম শুনলে দরুদ শরিফ তো পড়তে হবে কিন্তু তাশাহুদের ভিতরে যদি নিজে পড়েন বা খুতবা পড়ার ভিতরে শোনেন তো দরুদ বলা যাবে না। কে বলেছেন? ফোকাহারা বলছেন।

এমনিভাবে মসজিদে আজান হয়। মুয়াজ্জিন সাহেব বলেন ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ।’ আর সবাই বলে উঠে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারণ হাবিবের নাম এসেছে। তো আল্লাহর রসুলের নামে দরুদ হলো ঠিকই কিন্তু এটা আজানের জবাব হলো না। তাই আজানের জবাব অন্যভাবে দিতে হবে। তাহলে জবাব কীভাবে দিতে হবে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ— এর জবাব হবে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ।’ এর কারণ কী? বুখারি শরিফের হাদিস।

মুয়াজ্জিন যা বলে, তোমরাও তাই বল। এত ছোট একটা মাসয়ালা এটাও আমরা ভুলে গিয়েছি। দেখেন মাদ্রাসা, মসজিদ ও হক্কানি আলেমের দ্বারা কী লাভ হয়। বাপ-দাদা চৌদ্দ পুরুষ থেকে শুনে আসছি যে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ’ বললে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলতে হয়। কিন্তু হক্কানি আলেমের দ্বারা সত্য জিনিস পেয়েছি। আলেমের দরকার আছে না নেই? আছে। এই জন্য যারা সত্য বিরোধী তারা আলেমের বদনাম করে। উত্তম হলো তাশাহুদ, খুতবা, আজানের ভিতরে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ’ এই বিষয়গুলো ছাড়া হুজুরেপাকের নাম শুনলে বেশি বেশি দরুদ শরিফ পড়া।

 

আজান শেষ হলে প্রথমে দরুদ শরিফ পড়তে হয়। কারণ আজানের মধ্যে আল্লাহ রসুলের নাম এসেছিল। এরপর আজানের দোয়া পড়তে হবে— এই দোয়ার মধ্যে বলা হয়েছে— হে আল্লাহ আমার নবীকে মাকামে মাহমুদ দান কর। মাকামে মাহমুদ কি? যেখানে দাঁড়িয়ে হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে উম্মতের জন্য সাফায়াত করবেন। আল্লাহর রসুল বলবেন, হে আল্লাহ তারা দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় আজানের জবাব দেওয়ার পর দোয়া করেছে যাতে তুমি আমাকে মাকামে মাহমুদ দান কর। তুমি আজকে হাশরের ময়দানে আমাকে মাকামে মাহমুদ দান করেছ। ফলে যাদের দোয়া আছে আমি তাদের ভুলতে পারি না, তাই যারা আমার জন্য দোয়া করেছে আমি তোমার কাছে তাদের সবার জন্য সাফায়াত করছি। এই কারণে আজানের পরে দোয়া পড়া হয়। দোয়ার মাঝে অতিরিক্ত কালিমা পড়া হয়।  অনেক কিছু আছে যা বই-পুস্তকের মাঝে দেখা যায় কিন্তু তা হাদিসে নেই।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর