শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের কাণ্ডজ্ঞানহীন হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ ডেকে আনবে না

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর সে দেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী ২০ থেকে ৩০ লাখ অভিবাসীকে তাড়ানোর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সিবিএস টিভিতে সোমবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, অপরাধ কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসায় জড়িত প্রচুর লোক যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, যাদের সংখ্যা ২ থেকে ৩ মিলিয়ন হতে পারে। এসব লোককে তিনি দেশ থেকে বের করে দেবেন কিংবা জেলে ঢোকাবেন। দেশের দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প, তাতেও অটল থাকার কথা বলেছেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করার সংকল্প ঘোষণা করলেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে তা থেকে কিছুটা হলেও সরে এসেছেন। বলেছেন, যেসব দেশ থেকে সন্ত্রাসী আসছে সেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে ট্রাম্প জিতলেও পপুলার ভোটে হিলারিই ছিলেন শীর্ষে; যাতে প্রমাণিত হয়েছে সে দেশের বেশির ভাগ মানুষ ট্রাম্পবিরোধী। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে নিজেদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করছে লাখ লাখ মানুষ এবং এজন্য প্রতিদিনই বিক্ষোভ প্রদর্শিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমৃদ্ধ অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও শুধরে চলার বদলে দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর ৩০ লাখ অভিবাসীকে দেশ থেকে বহিষ্কার কিংবা জেলে ভরার হুমকি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের এক নম্বর সামরিক শক্তির দেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকেও তারা শীর্ষে। যে দেশটি গড়ে উঠেছে সারা দুনিয়া থেকে আসা অভিবাসী নিয়ে, সে দেশের প্রেসিডেন্টের অভিবাসীবিরোধী বক্তব্য সত্যিকার অর্থে বেমানান। ট্রাম্পের বর্ণবাদী আচরণ জার্মানির ঘৃণিত শাসক হিটলারের সঙ্গেই কেবল তুলনীয়। এ আচরণ শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, সারা দুনিয়ায় অস্থিরতা সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। বলাই বাহুল্য, বাদ বাকি বিশ্বকে উপেক্ষা করে যা ইচ্ছা তাই করার প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও কল্যাণ ডেকে আনবে না। নিজেদের জাতীয় স্বার্থেই ট্রাম্প  সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার পথ বেছে নেবেন, এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর