বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইবাদতের উদ্দেশ্য আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

আল্লাহর ইবাদতের জন্য মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করাই ইবাদতের উদ্দেশ্য হতে হবে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য যে কাজ করা হয়, তাতে ব্যক্তির স্বার্থসিদ্ধি কিংবা আত্মগরিমা প্রকাশের অবকাশ থাকে না। পবিত্র কোরআনের সূরা কাহেফ আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন— ‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভের আশা করে, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে অন্য কাউকে শরিক না করে।’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকে দেখানো বা সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদত না করে। প্রতিটি সৎকাজ  ইবাদতেরই অংশ। সে হিসেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য অর্থাৎ নিজের গরিমা প্রকাশের জন্য সৎকাজ করা হলে তা আল্লাহর দরবারে তাত্পর্য হারায়। এমনকি কেউ যদি নামাজি হন, কিন্তু সে নামাজি হওয়ার উদ্দেশ্য যদি থাকে অপরের কাছে নিজেকে নামাজি হিসেবে দেখানো তবে তা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সক্ষম হবে না। এ সম্পর্কে সূরা মাউনের ৪৭নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে— ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে অমনোযোগী, যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস অন্যকে দেয় না।’ হযরত রাফে’বিন খাদিজা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত যে বিষয়ে তা হচ্ছে ছোট শিরক। নিবেদন করা হলো : ইয়া রসুলুল্লাহ! ছোট শিরক কি? তিনি বললেন, ‘রিয়া’ লোক দেখানোর জন্য নেক আমল করা। আল্লাহ (যেদিন বান্দাদেরকে প্রতিদান প্রদান করবেন সেদিন) বলবেন : ‘তোমরা যাদেরকে দেখানোর জন্য নেক আমল করতে (আজ) তাদের কাছে গিয়ে দেখ কোনো পুরস্কার পাও কিনা।’— আহাদ ও বায়হাকী, তাবরানী।

মহান আল্লাহপাক ঘোষণা করেন : ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের সমক্ষে এমন বিষয় সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ লাভ করবে, যে বিষয়ে তারা ধারণাও করেনি’। এ আয়াতে করীমার তাফসির প্রসঙ্গে হাক্কানি আলেমদের অভিমত, দুনিয়ায় তারা এমন সব আমল করত, আপাতদৃষ্টিতে যা নেক কাজ বলেই দেখা হতো, অথচ প্রকৃত প্রস্তাবে কেয়ামতের দিন দেখা যাবে তা আসলে বদ আমল।  আল্লাহ আমাদের সব ধরনের বদ আমল থেকে দূরে থাকার এবং কেবল তারই সন্তুষ্টি বিধানে ইবাদত ও সৎকাজ করার তওফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর