বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নাসিরনগরের তদন্ত রিপোর্ট

দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পেছনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেছে পুলিশ সদর দফতর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও বিষয়টি সমর্থিত হয়েছে। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে সম্বল করে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাটের মাধ্যমে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। উত্তেজনা প্রশমনে নাসিরনগর থানা পুলিশও যথার্থ গুরুত্বারোপ করেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনকে অভিহিত করলে হামলার ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন যুবদল নেতা সাতবর্গ ট্রাক স্ট্যান্ডে গিয়ে হরিপুর থেকে নাসিরনগরের সমাবেশস্থলে লোক পাঠানোর জন্য সাতটি ট্রাক ভাড়া করেন। যুবদল নেতার নিজের ট্রাকসহ আরও ছয়টি ট্রাক এ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। সমাবেশে যোগদানের জন্য হরিপুরসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার মাধবপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর এবং আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াতের লাঠিসোঁটাধারী ক্যাডারদের আনা হয় মন্দিরসহ হিন্দুদের বাড়িতে হামলার উদ্দেশ্যে। সমাবেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়। সমাবেশ চলাকালেই নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। কাবাঘরকে অবমাননার অভিযোগে সংখ্যালঘুদের উপাসনাগার ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হলেও সেটিও ছিল ষড়যন্ত্রের অংশ ও সাজানো ঘটনা। রসরাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট স্থানীয় আল আমিন সাইবার ক্যাফ থেকে হ্যাক করে তাতে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করা হয়। উসকানি সৃষ্টিতে ব্যবহার করা হয় ওই ছবির ঘটনাকে। নাসিরনগরের ঘটনা দেশের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় সহনশীলতা সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টি করেছে বহির্বিশ্বে। আমরা আশা করব এ ঘটনার উসকানিদাতাদের পরিচয় যাই হোক তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের দায় নির্ধারণ করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও কাম্য।

সর্বশেষ খবর