শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাফল্যগাথা

শিল্পায়নে আশাজাগানিয়া ঘটনা

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বাংলাদেশে নীরব বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনেও এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি সহায়তা বা প্রণোদনা ছাড়াই ক্ষুদ্র শিল্পের উদ্যোক্তারা নিজেদের সাফল্যের প্রমাণ রাখতে সমর্থ হয়েছেন। ঢাকার ধোলাই খাল ও কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ক্ষুদ্র শিল্পের যাত্রা হওয়ার পর তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ঢাকার বাইরে বগুড়া, রংপুর, যশোর, জয়পুরহাট, পাবনায় গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র শিল্পের বিশেষায়িত পল্লী। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। এ খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন নারীরাও। ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে জিনজিরা। এখানকার খুদে ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি পণ্যসামগ্রীর কদর রয়েছে সর্বত্র। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরঘেঁষা জিনজিরা-শুভাঢ্যা থেকে শুরু করে কেরানীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়েই গড়ে উঠেছে ২ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্প কারখানা। ১২ লাখ কারিগর-শ্রমিকের উদয়াস্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠছে সম্ভাবনার আরেক বাংলাদেশ। সুই, ব্লেড, আলপিন, নাটবল্টু, রেল-বিমানের যন্ত্রাংশ, ফ্লাস্ক, মোবাইল ফোন সেট থেকে শুরু করে সমুদ্রগামী জাহাজের যন্ত্রপাতি পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে এখানে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মালামাল তৈরি করছেন প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া না জানা ‘ইঞ্জিনিয়াররা’। বছরের পর বছর গবেষণা শেষে জাপান, কোরিয়া, চীন যেসব সামগ্রী উৎপাদন করেছে, সেসব জিনিস এক নজর পরখ করেই হুবহু তৈরির কৃতিত্ব দেখিয়েছেন জিনজিরার ইঞ্জিনিয়াররা। সেখানকার অভাবনীয় মেধার খুদে কারিগরদের দক্ষতা সত্যিকার অর্থেই অবাক করার মতো। উদ্যোক্তারা বলেছেন, সরকারি অনুমোদন ও পুঁজি সহায়তা পেলে জিনজিরার কারিগররা অত্যাধুনিক ড্রোন-রোবটও তৈরি করতে সক্ষম হবেন। বর্তমানে জিনজিরাকেন্দ্রিক খুদে কারখানাগুলোয় বছরে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। জিনজিরাকে অনুসরণ করে দেশজুড়ে এ রকম ৪০ হাজারেরও বেশি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের শিল্পায়নে যার অবদান আশাজাগানিয়া বললেও অত্যুক্তি হবে না।

সর্বশেষ খবর