শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
বায়তুল মোকাররমের খুতবা

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ গঠনে ইসলামের আহ্বান

মাওলানা মিজানুর রহমান
সিনিয়র পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

সকল প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের সর্বোত্তম দীনের পথে হেদায়েত দান করেছেন এবং আমাদের ইসলামের সৌভাগ্যে ভাগ্যবান করেছেন। আমাদের সাহাবা ও আউলিয়ায়ে কিরামের তরিকায় চালিত করে মর্যাদাবান করেছেন। আমরা সালাত ও সালাম পেশ করি আমাদের নবীকুল শিরোমণি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। মহান আল্লাহ যাকে সব উম্মতের হেদায়েতের জন্য পাঠিয়েছেন। তার সব আল-আওলাদ ও সাহাবা এবং আহলে বাইতের ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।

এই দীন রহমতের দীন, রহমতের নবীর (সা.) এই শরিয়ত রহমতের শরিয়ত। কোনো সন্দেহ নেই যে, এই দীনের পয়গম্বর (সা.) মানুষকে বিপর্যয়, অশান্তি, ত্রাস ও খুন থেকে মুক্ত করে এক শান্ত নিরাপদ বিশ্ব বানানোর জন্য তাশরিফ এনেছেন, যেমন আল্লাহ ইরশাদ করেন : ‘আমি আপনাকে সমস্ত জাহানের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সূরা আম্বিয়া : ১০৭)।

বিশ্বের সব সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। এ  পরিবারের সদস্যদের প্রতি যারা সদয় হবে আল্লাহ তাদের প্রতি সদয় হবেন। একজন মানুষ সে যাই হোক না কেন, তার জন্য পৃথিবীতে নিরাপদ জীবন ধারণের অধিকার স্বীকৃত। সে মুমিন হোক কিংবা কাফির, কিংবা ফাসিক। অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে খুন করা কিংবা তার সম্পদ গ্রাস করা কিংবা তাকে অপমানিত করা হারাম। কোরআন বলছে : আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করো না। (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৩)। আরও ইরশাদ হচ্ছে : যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা করল সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। (সূরা মায়েদা : ৩২)।

মহানবী (সা.) বলেন, সর্বোচ্চ কবিরা গুনা হলো মানুষ খুন করা। এখানে মুসলিম-অমুসলিম পার্থক্য করা হয়নি। সৃষ্টির প্রতি কল্যাণকামী হওয়া ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আসুন আমরা এ কল্যাণকামিতার গুণে গুণান্বিত হই।

নবী (সা.) বলেন, দীন সর্বৈব কল্যাণকামিতা (বিশ্বমানবতার জন্য কল্যাণকামী)। সাহাবিরা জানতে চাইলেন, কার জন্য হে রসুল (সা.)? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তার রসুলের জন্য, মুসলিম নেতৃবৃন্দের জন্য এবং তাদের সর্বসাধারণের জন্য।

আপনারা আপনাদের সন্তান-সন্ততির বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী ও সাবধান থাকুন। তাদের সুন্দর চরিত্রের শিক্ষা দিন। তাদের বিষয়ে সজাগ থাকুন আপনার সন্তানকে আপনার চোখ ফাঁকি দিয়ে যেন সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিতে না পারে। সন্ত্রাসীরা এই অবুঝ সরল কিশোরদের পরিবারের নিয়ন্ত্রণ থেকে ভাগিয়ে নিয়ে নানা অপকর্মের প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি বানাতে চেষ্টা করে।

সবশেষে আমরা আহ্বান করি, আমাদের সন্তানদের, আমাদের যুবকদের সব সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে বেঁচে থাকতে। হে আল্লাহ! আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশকে আপনি সন্ত্রাস ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন এবং একে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশে পরিণত করুন।

সর্বশেষ খবর