সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

যানজটে অবরুদ্ধ ঢাকা

রাজপথ ফুটপাথ অপদখল বন্ধ হোক

যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা। সংবাদ মাধ্যমে মূর্তিমান এ সমস্যা নিয়ে লেখালেখি একটি রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সমস্যাটির রাশ টেনে ধরার দায়িত্ব যাদের, তাদের সম্বিৎ কিছুতেই ফিরছে না। যানজটের অবসানে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হলেও ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার অবিমৃষ্যকারিতায় তা কোনো কাজেই আসছে না। ঢাকা শুধু দেশের রাজধানীই নয়— দেশের অর্থনীতিরও হৃৎপিণ্ড। দেশজ উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ঢাকাকেন্দ্রিক। সস্তা শ্রমের আকর্ষণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের শিল্প স্থাপনের সম্ভাবতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশের রাজধানীতে এসে যানজটে নাকাল হয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। রাজধানী ঢাকার যানজটের প্রধান দুটি কারণের একটি ফুটপাথ-রাজপথ অপদখল। দ্বিতীয়ত, ট্রাফিক ব্যবস্থার লেজেগোবরে অবস্থা। ট্রাফিক কর্তাদের সঙ্গে গণপরিবহনের মালিকদের লেনদেনের সম্পর্ক থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছে। যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে লোক ওঠানো, ইচ্ছাকৃতভাবে যানজট সৃষ্টি করে বাসে যাত্রী ভরার পাঁয়তারা রাজধানীর যানজটে ইন্ধন জোগাচ্ছে। ফ্লাইওভার, ইউলুপ নির্মাণের দীর্ঘসূত্রতাও যানজটকে স্থায়ী রূপ দিচ্ছে। যখন তখন রাস্তা খোঁড়ার কারণেও বাড়ছে যানজট। স্কুলগুলোতে নিজস্ব পরিবহন না থাকায় রাজধানীতে অন্তত ৫০ হাজার প্রাইভেটকার ব্যবহৃত হচ্ছে শিক্ষার্থী পরিবহনের কাজে। কোচিং নামের অভিশাপ বহালতবিয়তে টিকে থাকায় সে কাজেও শিক্ষার্থীদের যাওয়া আসায় ব্যবহার হচ্ছে হাজার হাজার প্রাইভেটকার। রাজধানীতে যানজট সৃষ্টিতে প্রাইভেটকারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার রিকশা কিংবা সিএনজির চেয়েও বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে রাজপথ-ফুটপাথ অপদখল বন্ধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। গণপরিবহনকে দেওয়া ট্রাফিক কর্তৃপক্ষের অবাধ স্বাধীনতায় বাদ সাধতে হবে। বিশৃঙ্খলভাবে রাস্তা পারাপারের লাগামও টেনে ধরতে হবে শক্তভাবে। নির্মাণ খরচ শনৈঃশনৈঃ বৃদ্ধির মতলবে ফ্লাইওভার ও ইউলুপ নির্মাণে যে দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে সেটিরও অবসান হওয়া দরকার। সবচেয়ে বড় কথা এ সমস্যার সমাধানে কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে সততার যে সংকট হয়েছে তা থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর