মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে আবাসিক এলাকা

বাণিজ্যিকীকরণের প্রক্রিয়া রুখতে হবে

রাজধানীর আবাসিক এলাকাগুলোর বাণিজ্যিকীকরণ আবাসিক বৈশিষ্ট্যের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি না থাকায় রাজউক বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠিত আবাসিক এলাকাগুলো বাণিজ্য এলাকায় রূপান্তরিত হচ্ছে। ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারা কোনোটিরই আবাসিক বৈশিষ্ট্য এখন খুঁজে পাওয়া ভার। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে বাণিজ্যিকীকরণের মহোৎসব চলেছে অবাধেই। আবাসিক ভবনের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শপিং কমপ্লেক্স, রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যাংক, পারলারের ভিড়ে এলাকার আবাসিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যেতে বসেছে। ধানমন্ডির বেশ কয়েকটি সড়কে স্কুল শুরু ও ছুটির পর সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। গুলশান বনানী বারিধারা এবং উত্তরার অবস্থাও তা থেকে খুব একটা আলাদা নয়। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ধানমন্ডি, গুলশানের মতো এলাকাগুলো শুধু সমাজের অভিজাত বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখেই আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু তাদের অন্যান্য চাহিদার জন্য আরও কিছু অনাবাসিক স্থাপনা গড়ে তোলার বিষয়টি তখন বিবেচনায় না আনায় অবাঞ্ছিত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আবাসিক এলাকার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে চলতি বছর ৪ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদের সভায় পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নগরীর আবাসিক এলাকা থেকে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নে অনুমোদন-বহির্ভূত সব ইমারতের নকশা বাতিল ও উচ্ছেদ করা, এসব স্থাপনায় সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল, ঢাকা ওয়াসাকে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, ডেসা ও ডেসকোকে বিদ্যুৎ এবং তিতাসকে গ্যাস সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশনার পর ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো সংস্থাকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের, তারা শুধু তালিকা তৈরি করেই নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বদলে চলছে বেপরোয়া বাণিজ্য। আবাসিক এলাকার প্রথাসিদ্ধ চেহারা ফিরিয়ে আনতে এ ব্যাপারে সরকারকে আরও তত্পর হতে হবে। বন্ধ করতে হবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণের পথ।

সর্বশেষ খবর