ইসলামের প্রধান স্তম্ভ হলো নামাজ। হাদিসের ভাষায় নামাজ দীনের স্তম্ভ বা খুঁটি। হাদিসে আরও আছে, নামাজ হলো সর্বোত্তম ইবাদত। দীনের অনেক আমল নির্ভর করে নামাজের ওপর। যে নামাজ ঠিকঠাক মতো যথারীতি আদায় করে তার বাকি আমলগুলোও পরিশুদ্ধ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে নামাজে ত্রুটি থাকলে অন্য সব আমল ভালো হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ৪০ দিন পর্যন্ত একাধারে তাকবিরউলার সঙ্গে নামাজ আদায় করলে তার নাম মুনাফিকের তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়। নামাজ ভালো হলে অন্য সব আমল ভালো হবেই। যার বাস্তব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আল্লাহতায়ালা নিজে। তিনি বলেন— ‘তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর নিঃসন্দেহে নামাজ সব অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।’ নামাজের মাধ্যমেই আমরা নির্ণয় করে থাকি কে মুসলমান আর কে মুসলমান নয়। হাদিসে আছে— কাফের ও মুমিনের মধ্যকার পার্থক্য হলো নামাজ ছেড়ে দেওয়া। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। যে নামাজের হিসাব সঠিকভাবে দিতে পারবে, বাকি আমলের হিসাব দেওয়া তার জন্য সহজ হয়ে যাবে, আর নামাজের হিসাবে যদি কেউ ধরা পড়ে তাহলে বাকিগুলোর মাঝে ধরা পড়াটা স্বাভাবিক। সুতরাং এসব দৃষ্টিকোণ থেকেই নামাজের প্রতি এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, সময় হলে বিলম্ব না করে নামাজ আদায় করে নাও। যারা ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজ আদায় করে আল্লাহতায়ালা তাদের প্রশংসা করে বলেন— ওইসব লোক যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কেনা-বেচা কোনো কিছুই আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখতে পারে না। অন্য সব আমলের মধ্যে নামাজ আল্লাহর প্রিয় আমল আর নামাজের মধ্যে সবচেয়ে আল্লাহর প্রিয় আমল কোনটি জানেন? সবচেয়ে প্রিয় আমল সিজদা। বলা হয় যখন বান্দা সিজদায় যায় সে যেন আল্লাহর কোলে চলে গেল। ফজলুল রহমান গঞ্জমুরাদাবাদী এক বুজুর্গ ছিলেন। তিনি বলেন, যখন আমি সিজদায় যাই তখন মনে হয় আমি আল্লাহর কোলে চলে গেছি, আল্লাহতায়ালা আমাকে চুমা দিচ্ছেন। নামাজ এমন জিনিস হাকিমুল উম্মত হজরত থানবীর (রহ.) পীর হাজী এমদাদুল্লাহ মহাজেরে মক্কী (রহ.) বলেন, নামাজ এমন শান্তি ও মহব্বতের জিনিস, আমার এমন প্রিয় জিনিস আল্লাহতায়ালা জান্নাতে দিয়ে যদি বলেন যে ইমদাদ, তুমি কি চাও। তাহলে আল্লাহর কাছে আর কিছু চাইব না নামাজ পড়ার জন্য একটু জায়গা চাইব শুধু। ৪০ বছরের মধ্যে এক দিনও তকবিরউল্লা ফওত হয় নাই তার। তারা ছিল মানুষ। ছাইদ ইবনে মুছাইব ২০ বছর পর্যন্ত মসজিদে গেছেন তার আগে কেউ মসজিদে যেতে পারেনি। আর ৪০ বছর পর্যন্ত তকবিরউলার সঙ্গে নামাজ পড়েছেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইমামতি করে নামাজ পড়িয়েছেন।