বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের অপরাধ প্রবণতা

সততার সংকট দূরীকরণের উদ্যোগ নিন

অপরাধ দমন যাদের কর্তব্য সেই পুলিশ সদস্যরা নিজেরাই যেভাবে একের পর এক অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছেন তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, শ্লীলতাহানি সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ সদস্যদের নাম। কনস্টেবল থেকে পদস্থ কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধের সঙ্গে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের কর্মকাণ্ড পেশাদার অপরাধীদেরও হার মানাচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও কমছে না অপরাধ প্রবণতা। কতিপয় সদস্যের অপকর্মের দায় নিতে হচ্ছে গোটা পুলিশ বাহিনীকে। স্মর্তব্য, ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত ছয় বছরে নানা অপরাধে ৭৬ হাজার ৪২৬ জন পুলিশকে অর্থদণ্ড, তিরস্কার, বদলি, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর ও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শাস্তি পাওয়াদের মধ্যে ৭৬ হাজার ৯৯ জনই কনস্টেবল থেকে উপপরিদর্শক পদমর্যাদার। আর পরিদর্শক থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তা ৩২৭ জন। গত শুক্রবার রাজধানীর সোনারগাঁও মোড়ে ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়ে পুলিশের দুই সদস্য। তাত্ক্ষণিকভাবে তাদের বরখাস্ত করা হলেও এ ঘটনা পুলিশের ভাবমূর্তিতে যে কলঙ্ক লাগিয়েছে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বিড়ম্বনাই ডেকে এনেছে। পুলিশের অপরাধপ্রবণতা দেশের জন্য অশুভ সংকেতের নামান্তর। আইনের রক্ষকরা আইন ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের কোনো জায়গা থাকে না। পুলিশের অপরাধপ্রবণতা রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধে জড়িত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না বলেই তাদের মধ্যে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। পুলিশ সদস্যদের অপরাধপ্রবণতা রোধে তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি, লোক নিয়োগ, পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে বিদ্যমান আকাশচুম্বী দুর্নীতি রোধ করতে হবে। পুলিশের কনস্টেবল থেকে ননক্যাডার প্রতিটি পদের নিয়োগের ক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। যারা বড় অঙ্কের উেকাচ দিয়ে চাকরিতে ঢোকেন তাদের কাছ থেকে সততার আশা দূরাশার শামিল। পুলিশ সদস্যদের সততার সংকট দূর করতে হলে এসব ক্ষেত্রে যে বাণিজ্য হয়, তা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর