শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন

অপব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে

বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৬-এর খসড়ায় মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর রাখা হয়েছে। আগে থেকেই বিয়ের বয়স ছিল ১৮, তবে আইনের খসড়ায় বাল্যবিয়ে রোধে শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক দিক। তবে খসড়ার নেতিবাচক দিক হলো— এতে আদালতের নির্দেশ ও বাবা-মায়ের সম্মতিতে ক্ষেত্রবিশেষে বাল্যবিয়েরও সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই আইনে ইতিমধ্যে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে নারী সংগঠনগুলো। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও উঠেছে আপত্তি। তারা বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে বিয়ের যে সুযোগ রাখা হয়েছে তার অপব্যবহারের আশঙ্কা করেছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার সুযোগ রাখাকে আমরা নারী ও মানবাধিকার সংগঠনের ভাষায় ঢালাওভাবে সমালোচনা করতে চাই না। বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার বিষয়টিকে আমরা যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত বলে অভিহিত করতে চাই। তবে বিশেষ ছাড়ের সুযোগে বাল্যবিয়ের ঢালাও সুযোগ যাতে সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টিও জরুরি। এদিক থেকে নারী ও মানবাধিকার সংগঠনের বক্তব্য প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। আমাদের মতে, বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়ের বিষয়ে তাদের আপত্তি মূলত এর অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে। দেশে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স আগে থেকেই ১৮ বছর ছিল এবং তার অপপ্রয়োগ ঘটেছে ভয়াবহভাবে। ১২-১৩ বছরের মেয়েকে ১৮ বছর বয়সী দেখিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হয়েছে। খসড়া আইনটি পাস হলে সে অপকৌশলের আশ্রয় যাতে কেউ নিতে না পারে সে পথ বন্ধ করতে হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন এবং স্কুলের সার্টিফিকেটে উল্লিখিত বয়সকে আমলে আনতে হবে। এক্ষেত্রেও যাতে কারচুপির আশ্রয় না নেওয়া হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি। আমাদের দেশে মেয়েদের বাল্যবিয়ের প্রধান কারণ বখাটেদের উৎপাত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সে যথেচ্ছতার অবসান ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর