রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এমএলএম সমাচার

প্রতারণানির্ভর ব্যবসা বন্ধ হোক

এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের চোখের সামনেই ভুয়া এনজিও, এমএলএম ও ভুঁইফোড় কোম্পানিগুলোর প্রতারণা-জালিয়াতি সামনে চললেও তা দেখার কেউ নেই। সাধারণ মানুষের আমানত লুটে নিয়ে রাতারাতি উধাও হয়ে যাচ্ছে এসব ‘হায় হায় কোম্পানি’। প্রতারক চক্র কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়ার পর পত্রপত্রিকায় হৈচৈ হলেই সরকারি সংস্থাগুলো নড়েচড়ে ওঠে। লোক দেখানো কয়েক দিন তদন্ত চলে, একপর্যায়ে সবকিছুই চাপা পড়ে যায়। শুধু থামে না সর্বস্ব হারানো লোকজনের হাহাকার। রাজধানীসহ দেশজুড়ে গড়ে উঠেছে বিপুলসংখ্যক মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম কোম্পানি। ২০০২ সালে দেশে এমএলএম কোম্পানি ছিল ১৬টি, ২০০৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪টিতে। বর্তমানে সরকারি হিসাবে ৬৯টি এমএলএম কোম্পানির অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে ২ শতাধিক কোম্পানি ‘কাজ’ করছে। এসব ছাড়াও প্রতারণার বিষমন্ত্রকে সম্বল করে ভারত, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান থেকে নতুন নতুন সংস্থা বাংলাদেশে আসছে। তারাও মাল্টিপারপাস আদলের সার্টিফিকেট জোগাড় করে সাজাচ্ছে প্রতারণার পসরা। স্মর্তব্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন করা হয়। ওই আইনে এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসার জন্য লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে তা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে। এ আইনের অধীনে যারা লাইসেন্স পেয়েছে, তারা যেমন স্বচ্ছভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে না, তেমন বৈধ অনুমতি না নিয়েও অলীক স্বপ্ন দেখিয়েও অনেকে সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে। দেশে এমএলএম কোম্পানির নামে যে প্রতারণা ব্যবসা চলছে তার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশ থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার অবাধ স্বাধীনতা পাচ্ছে।  দেশবাসীকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে এ ব্যাপারে সরকার কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জেগে উঠবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর