মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ময়মনসিংহ ট্র্যাজেডি

পুলিশের বাড়াবাড়ি নিন্দনীয়

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর ওপর পুলিশি লাঠিচার্জে একজন শিক্ষক ও একজন এলাকাবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় সারা দেশের জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে ঢুকে পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করলে আবুল কালাম আজাদ নামে ৬০ বছর বয়সী এক শিক্ষক প্রাণ হারান। নিহত অন্য ব্যক্তির নাম সফর আলী। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। পুলিশের তাড়া খেয়ে তিনি মারা যান। পুলিশের দাবি, তাদের লাঠিচার্জে কেউ মারা যাননি। যে কলেজশিক্ষক মারা গেছেন তিনি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। ভ্যানচালক সফর আলী মারা গেছেন ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে। তিনিও অন্য কোনো কারণে মারা যেতে পারেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা বলেছেন, দুজনের কারও দেহেই আঘাতের চিহ্ন ছিল না। কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়ার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ চড়াও হওয়ার পরিণতিতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। পরিস্থিতির অবনতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বেআইনি কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করার কোনো সুযোগ নেই। এটি যে কোনো নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। বরং পুলিশ যেভাবে তাদের ওপর চড়াও হয়েছে তা হঠকারিতার পর্যায়ে পড়ে।  পুলিশের ক্ষমতার এই অতিচর্চা সরকারের জন্যও যে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে তা সহজেই অনুমেয়। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য কলেজ থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করতেই পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষক আহত হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। এই বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে থাকলে পুরো এলাকা রণাঙ্গনে পরিণত হয়। পুলিশের অসংযমী আচরণের কারণেই যে দুটি মূল্যবান প্রাণ ঝরে গেল, তা সহজেই অনুমেয়। আমরা আশা করব এ নিন্দনীয় ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এমনটিও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর