মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আল কোরআন চলার পথে গাইডলাইন

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

আল কোরআন চলার পথে গাইডলাইন

মানুষের পথচলার গাইডলাইন আল কোরআন। এ গ্রন্থ সুনিশ্চিতভাবে সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী। কোরআন যখন নাজিল হয় তখন এটি আল্লাহর বাণী কিনা, তা নিয়ে অবিশ্বাসীরা সংশয় সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। এ সংশয়কে চ্যালেঞ্জ করা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে। অবিশ্বাসীদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলা হয়, কোরআন যদি আল্লাহর কালাম না হয়ে থাকে তবে তারা সবাই মিলে চেষ্টা করে এমন একটি সূরা নিয়ে আসুক। সূরা ইউনুসের ৩৭ নম্বর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘এ কোরআন আল্লাহ ছাড়া আর কারোর দ্বারা রচিত নয়, এতে রয়েছে পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলোর সমর্থন ও বিধিবিধানের ব্যাখ্যা; এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি এসেছে রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে।’ পরের আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা নাকি বলে, সে-ই (হজরত মুহাম্মদ) এটি রচনা করেছে? তুমি বলে দাও তবে এ রকম একটি সূরা আনো দেখি আর আল্লাহ ছাড়া যাকে ইচ্ছা ডাকো যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’

কোরআন নাজিল হয়েছিল আখেরি পয়গাম্বর হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অধিকারী ছিলেন না। ছিলেন নিরক্ষর। কোরআনে এমন অনেক বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা সেই সময় দূরের কথা পরবর্তী হাজার বছরেও মানুষের অজানা ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশের কারণে প্রমাণিত হয়েছে মানুষের প্রচলিত ধারণার সঙ্গে সে সময় অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হলেও কোরআনের ভাষ্যই সঠিক।

কোরআনে রয়েছে সঠিক পথে চলার নির্দেশনা। একজন মানুষ তার যাপিত জীবনে কীভাবে চলবে, কী করবে, সবকিছুরই দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এই ঐশী গ্রন্থে। কোরআনে এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেওয়া হয়েছে যে সমাজে মানুষের ধন অর্জনের অধিকার যেমন স্বীকৃত, অর্জিত সম্পদে সমাজের পিছিয়ে পড়া বা গরিব মানুষের হকও তেমন স্বীকৃত। এজন্য জাকাতকে ধনীদের জন্য ফরজ বা অবশ্যপালনীয় করা হয়েছে। সম্পন্ন লোকদের তাদের সম্পদের যথাসম্ভব সামাজিক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে।

কোরআন মানুষকে মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হতে যেমন শিক্ষা দেয়, তেমন মদ-জুয়া-ব্যভিচারের মতো ক্ষতিকর প্রবণতা থেকে দূরে থাকার তাগিদ দেয়। ধর্মীয় ক্ষেত্রে সহনশীলতা এবং বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীকে সুন্দর ও মানুষের বাসযোগ্য করে তোলার তাগিদ রয়েছে এই গ্রন্থে। যেখানে শুধু মানুষ নয়, গাছপালা, পশু-পাখিসহ সব সৃষ্টির প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর