বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি

রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেছে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় রিজাল ব্যাংকের জড়িত থাকার বিষয়টি দিবালোকের মতোই স্পষ্ট। এ অর্থ ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংককে। এমন এক সময় রিজাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের দায় অস্বীকার করা হলো যখন আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ফিলিপাইন সফর করছে। সে দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের বৈঠকের কর্মসূচি থাকলেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেটি বাতিল করা হয়েছে প্রেসিডেন্সিয়াল হাউসের পক্ষ থেকে। স্মর্তব্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত রাখা হয়েছিল। এ রিজার্ভ থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ওই দেশের রিজাল কমার্স ব্যাংকের পাঁচজন গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তর হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক ও ওয়েলস্ ফারগো— এ তিন ব্যাংকের মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকে চৌর্যবৃত্তির উদ্দেশ্যেই পাঠানো হয়েছিল। এ অর্থ গত বছরের মে মাসে খোলা পাঁচটি হিসাবে জমা করা হয়। এ হিসাবগুলো ভুয়া তথ্য দিয়ে খোলা হয়েছিল। রিজার্ভ চুরির সঙ্গে এ ব্যাংকের ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার বিষয়টিও যা স্পষ্ট করেছে। চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক চক্র চুরির আরও বড় ধরনের ছক সাজিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সার্ভার হ্যাক করে ৬ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা বা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্স ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে করে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ ছাড় না করার নির্দেশ দেওয়ায় বিপুল অর্থ চুরির হাত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেহায় পায়। ফিলিপাইন সফররত আইনমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন রিজাল ব্যাংকের বক্তব্য অপ্রাসঙ্গিক। তার বক্তব্যের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেও বলা যায়, রিজাল ব্যাংকের দায় অস্বীকারের প্রবণতা চুরি যাওয়া বিপুল অর্থ উদ্ধারের বিষয়টি অনিশ্চিত করে তুলেছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় কূটনৈতিক ও আইনি লড়াই জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর