বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আবাসন সমস্যা

সমাধানের জন্য চাই সময়োপযোগী প্রস্তুতি

অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধারণ মানুষের জীবন মানে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। আবাসন চাহিদার ক্ষেত্রেও তা প্রভাব রাখছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আগামী চার বছরে আবাসন খাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের চাহিদা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ হবে। এ গবেষণায় বাংলাদেশের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের সংজ্ঞা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, গবেষণাটি করতে গিয়ে তারা দেখেছে, বাংলাদেশে এই তিন  শ্রেণির কোনো সংজ্ঞা নেই। তাই নিজেরাই একটি সংজ্ঞা তৈরি করেছে। যাতে ৬০ হাজার থেকে এর বেশি যাদের মাসিক আয় তাদের উচ্চবিত্ত হিসেবে ধরা হয়েছে। ২৫ হাজার থেকে যাদের আয় ৬০ হাজার টাকার মধ্যে, তারা শহরের মধ্যবিত্ত। আর যাদের আয় ১০ হাজার টাকার মধ্যে, তারা নিম্নবিত্ত। প্রতিবেদনে স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে পুনর্গঠিত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সমালোচনা করে বলা হয়েছে দেশের মানুষের গৃহায়ণ সমস্যার সমাধানে সহায়ক ভূমিকা পালনের জন্য এটি গঠিত হলেও স্বাধীনতার এত বছর পরও সরকারি সংস্থাটি সঠিক ভূমিকা পালন করতে পারেনি। উদাহরণ দিয়ে আইএফসি বলেছে, আবাসন খাতে গত বছর যে ৪৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন থেকে দেওয়া হয়েছে মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ। অথচ ওই ৪৯ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৮০ শতাংশ ঋণই গেছে সরকারি, বেসরকারি ও বিশেষায়িত ব্যাংক থেকে। বাংলাদেশে আবাসন খাত সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসির গবেষণাটি এ সমস্যার সমাধানে কিছুটা হলেও পথ দেখাবে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশগুলোর একটি। স্বাধীনতার পর রাস্তাঘাট, স্থাপনা, কলকারখানা নির্মাণে চাষযোগ্য জমির একটি বড় অংশ ব্যয় হয়েছে। দেশের ক্রমবর্ধমান আবাসিক চাহিদা মেটাতে এমন পরিকল্পনা নিতে হবে যেখানে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে গৃহনির্মাণে জমির অপচয় রোধ করতে হবে। গবেষণায় আগামী চার বছরে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের আবাসিক চাহিদা চারগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার যে আভাস দেওয়া হয়েছে তা এক্ষেত্রে সরকার এবং আবাসন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর