শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ছোট জাহাজের স্বল্পতা

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে বিড়ম্বনা

ছোট জাহাজের সংখ্যাস্বল্পতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে নির্ধারিত সময়ে পণ্য নামানো সম্ভব হচ্ছে না। পণ্য দিয়ে দিনের পর দিন জাহাজ নোঙর করে থাকায় ব্যবসায়ীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। স্বভাবতই বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে সময়মতো পণ্য খালাস করা দুরূহ হয়ে ওঠায় অনেকে চট্টগ্রামের বদলে মংলা বন্দরে তাদের পণ্য খালাস করছেন। স্মর্তব্য, বড় জাহাজগুলো পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারে না। তাই বন্দরের বহির্নোঙরে ও কুতুবদিয়া এলাকার গভীর সাগরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য নামিয়ে সেগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে নেওয়া হয়। কিন্তু ছোট জাহাজের সংকট থাকায় দীর্ঘ এক বছর ধরে বড় জাহাজ থেকে সময়মতো পণ্য নামানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পণ্য নামাতে এক মাস পর্যন্ত লাগছে। ছোট জাহাজ বুকিং প্রদানকারী সংস্থার তথ্যানুযায়ী প্রতিদিন বার্থিং মিটিংয়ের মাধ্যমে জাহাজ বুকিং দেওয়ার নিয়ম থাকলেও নভেম্বরের ৩০ দিনে মিটিং বসেছে মাত্র ১৫টি। ছোট জাহাজ খালি না থাকায় বাকি ১৫ দিন কোনো মিটিং বসেনি। ছোট জাহাজ সংকটের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের কিছু আমদানিকারক দায়ী বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা অনেক ক্ষেত্রে ছোট জাহাজগুলোকে সাগরে ভাসমান গুদাম বানিয়ে রাখায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ের আমদানিকারকরা নির্দিষ্ট সময়ে জাহাজ ছেড়ে না দেওয়ায় একদিকে যেমন সংকট তৈরি হচ্ছে, তেমন নতুন জাহাজ তৈরিও বন্ধ করে রাখা হয়েছে রহস্যজনক কারণে। ফলে সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ছোট জাহাজের কৃত্রিম সংকট দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করছে। এ সংকট আমদানিকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধিতেও ইন্ধন জোগাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যও এ সমস্যা বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির জাহাজ ভাড়া নেওয়ার সময় পণ্য খালাসে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ওই সময় অতিক্রান্ত হলে ডেমারেজ গুনতে হয়। জাহাজভেদে ডেমারেজের পরিমাণ দিনে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা যেহেতু এ টাকা পকেট থেকে দেন না সেহেতু তা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপর চেপে বসে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরে ছোট জাহাজ সংকটের অবসান ঘটানো উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর