রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য

প্রতিরোধে চাই জনসচেতনতা

নকল ভেজাল যেন সব কিছুকে গ্রাস করতে চলেছে। খাদ্যপণ্য থেকে দৈনন্দিন ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিনতে গিয়ে সেটি আসল না নকল তা নিয়ে গ্রাহকরা হিমশিম খাচ্ছেন। দেশে যে খাবার পণ্য বিক্রি হয় সেখানে নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য সীমা অতিক্রম করতে চলেছে। এমন কোনো ফলমূল নেই যেখানে ক্ষতিকর রাসায়নিকের মিশ্রণ নেই। ফল ও সবজির পচন রোধে নির্বিচারে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। মাছ কিনতে গিয়ে একই আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে ভোক্তাদের। ওষুধ কিনতে গিয়েও তাড়া করে বেড়ায় নকল ভেজালের ভয়। প্রসাধনীর ক্ষেত্রে নকল ভেজালের দৌরাত্ম্যের কোনো সীমা নেই। বাজারে নামিদামি যে সব প্রশাধনী বিক্রি হচ্ছে তার সিংহভাগই নকল। ভেজাল শিশুখাদ্য শিশুর প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। মানহীন ক্ষতিকর প্যারাসিটামল খেয়ে অনেকগুলো শিশুর প্রাণ গেলেও এ জন্য কাউকে সাজা পেতে হয়নি। মামলার চার্জশিট যারা খাড়া করেন তাদের কেরামতিতে নিষ্পাপ শিশুদের খুনিরাও খালাস পেয়ে গেছেন অবলীলাক্রমে। নকল ভেজালের দৌরাত্ম্যে মানুষের জীবন জিম্মি হয়ে পড়লেও তা দেখার কেউ নেই। এসব দেখার দায়িত্ব যাদের, তারা দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় বেতনভাতা পেলেও তাদের আনুগত্য সরকার বা জনগণ নয়, নকল ভেজালকারীদের প্রতি। মাসোহারা পাওয়ার লোভে তারা ন্যূনতম নৈতিকতাকেও বিসর্জন দিতে কার্পণ্য করছেন না। ভেজাল কর্মকাণ্ডে সব কিছুই অনিরাপদ হয়ে উঠছে এমন বাস্তবতার কথা স্বীকার করেছেন ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আইন প্রয়োগ করে এ ক্ষেত্রে শতভাগ সুফল পাওয়া যাবে না। এ জন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও একযোগে কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতেও উদ্যোগ নিতে হবে ভোক্তা সংগঠনগুলোকে। তার এ বক্তব্যটি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। নকল ভেজালের দৈত্যকে ঠেকাতে আইনের চেয়ে জনসচেতনার গুরুত্ব অনেক বেশি। কীভাবে তা নিশ্চিত করা যায় সে দিকে সবাইকে নজর দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর