নবীপ্রেম ইমানের অন্যতম শর্ত। পবিত্র কোরআনে নবীপ্রেমিকদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘সুতরাং যাহারা তাহার প্রতি ইমান আনে তাহাকে সম্মান করে, তাহাকে সাহায্য করে এবং যে নূর (আল-কোরআন) তাহার সঙ্গে অবতীর্ণ হইয়াছে উহার অনুসরণ করে তাহারাই সফলকাম।’ (সূরা আল আরাফ, আয়াত-১৫৭)।

রহমাতুললিল আলামিন মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা যে ইমানের একটি অবিচ্ছেদ্য শর্ত তা হাদিসেও নিশ্চিত করা হয়েছে। রসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার প্রতি ভালোবাসা তোমাদের অন্তরে নিজেদের সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা ও সমগ্র মানবজাতি অপেক্ষা বেশি না হবে। (বুখারি, মুসলিম)।

অর্থাৎ নবীপ্রেমে কেউ যাতে সীমা লঙ্ঘন না করে, আল্লাহর সঙ্গে তাকে শরিক করার ধৃষ্টতা না দেখায় সে ব্যাপারেও তিনি সতর্ক করেছেন। যেমনটি হয়েছে হজরত ঈসা (আ.)-এর ক্ষেত্রে তার অনুসারীদের আচরণে।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার আগে পেরেশান ছিলেন তার অনুসারীরা যাতে তার পবিত্র রওজাকে সিজদার স্থান হিসেবে বানাবার ধৃষ্টতা না দেখায়। এ প্রসঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ইয়দি-খ্রিস্টানদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। তারা নিজেদের নবীদের কবরকে মসজিদ তথা সিজদা করার স্থান বানিয়ে নিয়েছিল। (বুখারি)।

সাহাবাদের সবাই ছিলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেমিক। এ জন্য তারা তার আদর্শকে যাপিত জীবনে ধারণ করেছেন। রবিউল আউয়াল মাসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শকে জীবনের পাথেয় ভেবে আমাদেরও তার সত্যিকারের প্রেমিক হিসেবে নিজেদের প্রমাণিত করতে হবে। তিনি আমাদের জন্য যে শিক্ষা রেখে গেছেন তা অটুটভাবে পালনের উদ্যোগী হতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা ভক্তি করার নামে তার নির্দেশ লঙ্ঘন করা যাবে না।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সত্যিকারের প্রেমিক হওয়ার  তৌফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক