মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হোক

বাংলাদেশ এখন অন্যতম ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ। স্বাধীনতার আগে যে দেশ ছিল ওষুধের ক্ষেত্রে প্রায় পরনির্ভর সে দেশের ওষুধ এখন বিক্রি হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়ও। মানসম্মত ওষুধ তৈরিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা উন্নত বিশ্বেও প্রশংসিত হচ্ছে। এটি যেমন একটি আলোকিত দিক তেমন অন্ধকারের দিক হলো নকল-ভেজাল ওষুধ তৈরির দিক থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে। ওষুধ তৈরির বিষয়টি দেখভালের জন্য দেশে ওষুধ প্রশাসন থাকলেও তারা সত্যিকার অর্থে সে দায়িত্ব পালনে কতটা পারঙ্গম তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। ফলে নকল-ভেজাল ওষুধ দেশের ওষুধের বাজার গ্রাস করতে চলেছে। রোগ নিরাময়ের জন্য নকল-ভেজাল ও মানহীন ওষুধ ব্যবহার করে মানুষ জীবন হারানোর মতো বিপদেও পড়ছে। বিষাক্ত প্যারাসিটামলে ২৮ শিশু হত্যার ঘটনা ঘটলেও এ দেশে এজন্য কাউকে সাজা পেতে হয়নি। তদন্তে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকায় শিশু খুনের দায়ে যাদের ফাঁসি হওয়ার কথা তারা বেকসুর খালাস পেয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হলেও তাদের সিংহভাগের আনুগত্য ওষুধ কোম্পানির প্রতি। ফলে নকল-ভেজালের ঘটনা ধরার কেউ নেই। দেশে অবাধে নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রি হলেও ওষুধ প্রশাসন কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকা পালন করে। মাঝে মাঝে র‌্যাব-পুলিশ ওষুধ প্রশাসনের লোকদের নিয়ে অভিযানে নামে। নকল-ভেজালের অভিযোগে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নেওয়া হয়। তবে দোষীদের শাস্তিদানের প্রক্রিয়া বেশি দূর গড়ায় না। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে সহযোগী দৈনিকে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন এতটাই অকার্যকর যে কোন কোম্পানি কোন আইটেমের কী পরিমাণ কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন নেয় আর কতটুকু আমদানি করে কিংবা আমদানি করা কাঁচামালের কতটুকু নিজেরা ব্যবহার করে, কতটুকু চোরা পথে অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেয়, এর কোনো হিসাব নেই। কোনো মনিটরিং নেই। ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে ওষুধ প্রশাসনের কাছে যে কাগজ ধরিয়ে দেয়, সেটাই সব। ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে যে অনিয়ম চলছে তার অবসানে এ যথেচ্ছতায় বাদ সাধতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহিতার অধীনে আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর