মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ড

সাবোট্যাজের অভিযোগ তদন্ত হোক

রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তিতে আট মাসের ব্যবধানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন; যাদের মধ্যে এক নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট কাজ করলেও ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রশস্ত পথ না থাকায় তাদের গাড়ি সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। দূর থেকে পাইপ লাগিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। শীত তথা শুষ্ক মৌসুমে দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটে। কড়াইল বস্তির মতো ঘিঞ্জি এলাকায় আগুন লাগার নানা কারণও বিদ্যমান থাকে। ঘিঞ্জি কোনো বস্তিতে কোনোভাবে আগুন লেগে গেলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তার পরও আট মাসের ব্যবধানে দুবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নানা সন্দেহ-সংশয় দানা বেঁধে উঠেছে। বস্তিবাসীদের কারও কারও ধারণা, তাদের উচ্ছেদের উদ্দেশ্যেই আগুন লাগানো হয়েছে। কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার পেছনে সাবোট্যাজের কোনো ঘটনা ঘটলে তা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করব, বস্তিবাসীদের অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে তদন্ত করে দেখা হবে। কড়াইল বস্তিতে বসবাসকারীর সিংহভাগই গার্মেন্ট শ্রমিক বা অন্যান্য শ্রমজীবী। অগ্নিকাণ্ডে তাদের অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় উত্তর সিটি করপোরেশন ও সরকার পাশে দাঁড়াবে, এমনটিও কাম্য। আমরা রাজধানীতে যত্রতত্র বস্তি গড়ে তোলার বিপক্ষে। এ ধরনের বস্তি যে সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয় তা ওপেন সিক্রেট। প্রশ্ন হলো, প্রশাসনের নাকের ডগায় বস্তি গড়ে ওঠে কীভাবে। বস্তিতে শ্রমজীবী গরিব মানুষ বসবাস করলেও তারা এগুলোর নির্মাতা নয়। এলাকার মস্তান ও রাজনৈতিক টাউটরা বস্তি তৈরি করে গরিবদের মাঝে ভাড়া দেয়। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসের অবৈধ সংযোগও দেয় তারা। বস্তি তৈরির এই অশুভ প্রক্রিয়া সরকার শক্ত হাতে দমন করবে, এমনটিই কাঙ্ক্ষিত। পাশাপাশি রাজধানীর ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে সব অবৈধ বস্তির উচ্ছেদ ঘটানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর