বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ কাম্য

অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। এই অস্ত্র যেমন আসছে সীমান্ত ডিঙিয়ে, তেমন দেশের দুর্ভেদ্য এলাকাগুলোর গোপন কারখানায়ও তা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এবং পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা। এসব কারখানার অস্ত্র সড়ক ও নৌপথে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা বেশ কয়েকটি অস্ত্র কারখানা আবিষ্কার করেছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূল এবং পাহাড়ি এলাকা অপেক্ষাকৃত দুর্ভেদ্য হওয়ায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে গড়ে উঠেছে অস্ত্র কারখানা। এক সময় কক্সবাজারের মহেশখালীতে গড়ে উঠেছিল কয়েক ডজন অবৈধ অস্ত্র কারখানা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টানা অভিযানে ভেঙে পড়েছে অবৈধ অস্ত্র তৈরির সেই নেটওয়ার্ক। এখন মহেশখালীর অস্ত্র কারখানার কারিগররা চট্টগ্রামের বাঁশখালী, রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ ও কক্সবাজারের চকরিয়া, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় গড়ে তুলেছে অবৈধ অর্ধশতাধিক অস্ত্র কারখানা। এসব কারখানায় ওয়ান শুটার, এসএসবিএল, ডিডিবিএল, থ্রি কোয়ার্টার ও এলজি তৈরি হয়। আবার কোনো কোনো অস্ত্র কারখানায় রাইফেলও তৈরি হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য এসব আগ্নেয়াস্ত্র হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বিদেশ থেকে চোরাইপথে আমদানিকৃত অস্ত্রের তুলনায় এগুলো যেমন সহজপ্রাপ্য তেমন দামেও অনেক সস্তা। সেহেতু সমাজবিরোধীরা এসব অস্ত্র সহজে সংগ্রহ করে অপরাধ সংঘটিত করার সুযোগ পাচ্ছে। চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারীদের পাশাপাশি পেশাদার খুনিরাও অনায়াসে সংগ্রহ করতে পারছে আগ্নেয়াস্ত্র। জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের অস্ত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রেও তা সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করছে। বিশেষত জলদস্যু ও ডাকাত দল এসব অস্ত্রের ক্রেতা হওয়ায় দেশের নদী পথগুলো যেমন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে তেমন বাড়ছে ডাকাতির ঘটনা।  আইনশৃঙ্খলা তথা জননিরাপত্তার স্বার্থে অবৈধ অস্ত্র তৈরির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তত্পর হতে হবে।  বাড়াতে হবে অনুসন্ধানী তত্পরতা।

সর্বশেষ খবর