বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতির সংলাপের উদ্যোগ

গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনের পথ খুলে যাক

নির্বাচন কমিশন বা ইসি পুনর্গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, বিজয় দিবসের পর এ ব্যাপারে সংলাপ শুরু হবে। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আগে রাষ্ট্রপতি সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী ও নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। স্বভাবতই নতুন নির্বাচন কমিশনে কারা আসবেন, রাষ্ট্রপতি এ প্রক্রিয়ায় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর পাশাপাশি নিবন্ধিত অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন কিনা সে বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের সঙ্গেও আলোচনা করেন এবং এটি দুনিয়ার প্রায় সব দেশের প্রচলিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশেও প্রতিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে এ নিয়ম অনুসৃত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নেওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনে সংসদে প্রতিনিধিত্ব না থাকায় ওই দলটির মতামত নেবেন কিনা সংশয় দেখা দেয়। রাষ্ট্রপতির সংলাপ সংক্রান্ত ঘোষণা সে সংশয়ের অবসান ঘটিয়েছে। স্মর্তব্য, সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালে দেশের পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণকারী নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেহেতু সে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেহেতু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনকে বিএনপি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার এ প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির দফতরে পৌঁছে দেওয়াও হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি বিজয় দিবসের পরে সংলাপের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে এ উদ্যোগ সফল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। জাতীয় ঐক্য ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে রাষ্ট্রপতি সবার সঙ্গে আলোচনা করে সবার আস্থাভাজন নির্বাচন কমিশন গঠনে সফল হবেন এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ। আশার কথা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে তারা এমন নির্বাচন চান যাতে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার আগের অবস্থান থেকে বিএনপি সরে আসায় সরকারের সঙ্গে তাদের দূরত্ব অনেকখানি কমেছে।  নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যা আশার আলো হয়ে দেখা দেবে এমনটিই কাঙ্ক্ষিত।

সর্বশেষ খবর