শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদের হুমকি

তরুণদের বিপথগামিতা ঠেকাতে হবে

তরুণরাই পথ দেখায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে তরুণদেরই হাত ধরে। স্বাধীনতার পর ৪৫ বছরে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতিও সম্ভব হয়েছে তারুণ্যের শক্তিকে সম্বল করে। সাহসী ও প্রত্যয়দীপ্ত তারুণ্য যেমন জাতীয় গৌরবের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তেমনি বিপথগামী তারুণ্য হয়ে উঠতে পারে সর্বনাশের চাবিকাঠি। তাদের কারণেই নিমিষেই নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে বাবা-মায়ের আশা-ভরসা। জাতির জন্যও বয়ে আনতে পারে কলঙ্কের তিলক। বাংলাদেশ নামের দেশটি সৃষ্টির পেছনে তরুণদের অবদান অনস্বীকার্য। মুক্তিযোদ্ধাদের শতকরা ৯৫ ভাগেরই বয়স ছিল ২৫-এর নিচে। যাদের প্রায় একশ ভাগই ছিলেন তরুণ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বাঙালির জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কৃতিত্বও তাদের। যে বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করে সে সময় বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি সেই বাংলাদেশকে দুনিয়ার দ্রুত অগ্রসরমান অর্থনীতির দেশে পরিণত করার কৃতিত্বও এ দেশের তরুণদের পাওনা। তবে তরুণদের বিপথগামিতার কারণেও জাতিকে কখনো কখনো হোঁচট খেতে হয়েছে। বিশেষত সাম্প্রতিককালে জঙ্গিবাদের অশুভ উত্থান— অপচেষ্টার সঙ্গে বিপথগামী তরুণদের সম্পর্ক বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ম্লান করেছে। জঙ্গিবাদের সঙ্গে প্রতি এক লাখের মধ্যে একজন তরুণের সম্পর্ক না থাকলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছেছে বিশ্ব সমাজের কাছে। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবাদ নামের অশুভ দৈত্যকে ঠেকাতে সৃষ্টি হয় জাতীয় ঐক্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বিষদাঁত ভাঙতে গ্রহণ করে একের পর এক পদক্ষেপ। এই অশুভ শক্তির শিকড় পুরোপুরিভাবে উৎপাটন সম্ভব না হলেও তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে সক্ষম হয় তারা। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ সাফল্য দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। তবে এ সাফল্যে যে আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই তা স্পষ্ট হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহে রাজধানীতে ৮ তরুণের উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায়। অতীতে এ ধরনের উধাও হয়ে যাওয়া তরুণদের দ্বারাই সংঘটিত হয়েছিল গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলা। আমরা আশা করব উধাও হওয়া তরুণদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধ্যের সব চেষ্টা করবে। পাশাপাশি এ বিষয়ে অভিভাবকদেরও সতর্ক হতে হবে।  ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে যারা তরুণদের বিপথগামী করছে তাদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর