শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দিকহারা বিমান দিক ফিরে পাক

দুর্নীতিবাজদের উচ্ছেদ করুন

রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমানকে ভূতের আছর থেকে কিছুতেই মুক্ত করা যাচ্ছে না। আত্মপ্রকাশের পরই ভূতের মতো পেছনে চলতে শুরু করে এ বিমান সংস্থা। ৫ কিংবা ১০ লাখ জনসংখ্যাবিশিষ্ট দেশের বিমান সংস্থা যেখানে চুটিয়ে ব্যবসা করছে, সেখানে ১৬ কোটি মানুষের দেশের জাতীয় বিমান সংস্থা লাগাতার লোকসানকে নিজেদের ভাগ্যলিপি হিসেবে মেনে নিয়েছে। অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির পাশাপাশি চোরাচালানে অভিযুক্ত বিমান সংস্থা হিসেবেও তাদের পরিচিতি গড়ে উঠেছে নিজেদের কৃতকর্মের কারণে। এ যাবৎ বাংলাদেশ বিমানের তিনটি উড়োজাহাজ জব্দ হয়েছে সোনা চোরাচালানের দায়ে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজগুলো দিকহারা হওয়ার রেকর্ড গড়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেটের উদ্দেশে একটি ফ্লাইট ছাড়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে সে ফ্লাইট ছাড়েনি। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটটি যাত্রী নিয়ে সিলেটের উদ্দেশে উড়াল দেয়। বেলা আড়াইটার দিকে বিমানটি এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার পর অবাক হয়ে যাত্রীরা বুঝতে পারেন ‘সিলেট’ নয়, তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে কলকাতায়! এ ব্যাপারে পাইলটের কাছে যাত্রীরা কৈফিয়ত চাইলেও কোনো সদুত্তর তারা পাননি। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর কলকাতা বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটটি। লন্ডন থেকে ছেড়ে আসা বিমানের একটি ফ্লাইট গত রবিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে বিমানটি অবতরণ করতে পারেনি। এ সময় বিমানটি আকাশে প্রায় ২০ মিনিট চক্কর দেওয়ার পর চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করে। বিমানের এই দিকহারা হওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট বিমানপোতগুলোকে দোষারোপের সুযোগ নেই। বিমানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের মতলব যে এসব ক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে, তা সহজেই অনুমেয়। বিমানের দিকহারা অবস্থার অবসানই শুধু নয়, জাতীয় এই প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠু ধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে এর মধ্যে বাসা বাঁধা চোর-লুটেরা ও জাতীয় বেইমানদের খুঁজে বের করা দরকার। জাতীয় মর্যাদার স্বার্থেই বাংলাদেশ বিমানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

সর্বশেষ খবর