বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত জাতীয় ওষুধনীতি

মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক হতে হবে

সরকার ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন জাতীয় ওষুধনীতি ২০১৬ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। মন্ত্রিসভা এ ওষুধনীতির খসড়ায় গত সোমবার নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছে। নতুন ওষুধনীতিতে ওষুধের মান ও দামের ক্ষেত্রে যে যথেচ্ছতা চলছে তা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মানসম্মত ওষুধ নিশ্চিতকরণে গঠন করা হচ্ছে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ। যাদের কাজ হবে কার্যকর, নিরাপদ ও মানসম্পন্ন ওষুধ সহজলভ্য করা। ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা নিয়মিত হালনাগাদ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওষুধনীতির খসড়াতে। বলা হয়েছে, প্রতি বছর অন্তত একবার ওষুধের মূল্য তালিকা হালনাগাদ করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করা হবে। ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশ এখন অগ্রণী দেশগুলোর একটি। চাহিদার সিংহভাগ ওষুধই তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। ওষুধ রপ্তানি বাবদ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের ওষুধের মান উন্নত বিশ্বের ক্রেতাদের দ্বারাও প্রশংসিত হচ্ছে। এটি যেমন মুদ্রার এক পিঠ, তেমন অন্য পিঠের তথ্য হলো দুনিয়ার যেসব দেশে নকল ভেজাল ওষুধের উৎপাদন বেশি সে তালিকায়ও রয়েছে বাংলাদেশের নাম। ওষুধ কোম্পানিগুলো দাম নির্ধারণেও যথেচ্ছতার আশ্রয় নিচ্ছে এমন অভিযোগও প্রবল। জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নকল ভেজাল ও মানহীন ওষুধের কবল থেকে ভোক্তাদের রেহাই দিতে পারলে তা হবে অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ওষুধনীতিতে ওষুধ নির্বাচন, পরিমাণ নির্ধারণ, ওষুধ সংগ্রহ, মজুদ ও বিতরণ, ওষুধের বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিয়ন্ত্রণ এবং স্বচ্ছ ও যৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে নজর দেওয়া হচ্ছে। দেশে নতুন প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞান স্থানান্তর এবং ওষুধ গবেষণায় উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগের বিষয়টিও ওষুধনীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করব জাতীয় ওষুধনীতি চূড়ান্ত করার আগে এটি আরও পর্যালোচনা করা হবে। ওষুধনীতির ফাঁক-ফোকরে মানহীন ওষুধ বিপণন ও মুনাফাখোরির কোনো সুযোগ যাতে কেউ না পায় তা নিশ্চিত করা হবে। ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় রাখতেও নেওয়া হবে যথাযথ উদ্যোগ।

সর্বশেষ খবর