মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গার্মেন্ট অস্থিরতার অবসান

কারখানা খুলে দেওয়া ইতিবাচক

গার্মেন্ট শিল্পের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র আশুলিয়ার বন্ধ কারখানাগুলো আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে নিরাপত্তার অজুহাতে এসব কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় মালিক পক্ষ। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় শ্রমিকরা কাজ করতে চাইলে সে ক্ষেত্রেই তারা কারখানা খুলে দেবে। বন্ধকালীন সময়ে শ্রমিকদের কোনো মজুরি দেওয়া হবে না এমন ঘোষণাও দেওয়া হয়। গত রবিবার বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং গার্মেন্ট শ্রমিকদের অনুরোধে সার্বিক অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে তারা কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্মর্তব্য, মজুরি বৃদ্ধির দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাই না করাসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১১ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনে নামেন আশুলিয়ার গার্মেন্ট শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে ২০ ডিসেম্বর ৫৯টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরের দিন শ্রমিক অসন্তোষের মুখে আরও চারটি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। গার্মেন্ট কারখানার মালিকরা দাবি করছেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা। সে হিসাবে, ১৫ দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এ শিল্পে। শিল্প ও শ্রমিকের স্বার্থের দিকে খেয়াল রেখেই তারা ২৬ ডিসেম্বর সোমবার থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আশুলিয়ায় গার্মেন্ট শ্রমিকরা যেসব ইস্যুতে আন্দোলনে নেমেছিলেন তার বেশ কিছু যে যৌক্তিক সন্দেহ নেই। এসব দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরার বদলে তারা যেভাবে আন্দোলনের নামে কাজ বন্ধ কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে হঠকারিতার আশ্রয় নিয়েছেন তা কারোর কাছেই কাম্য হওয়া উচিত নয়। বর্তমান সরকারের আমলে গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হয়। পাঁচ বছরমেয়াদি এই মজুরি কাঠামোর বদৌলতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন গড়ে প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মজুরি কাঠামোর মেয়াদ দুই বছর বাকি থাকতেই বৈধ পথে দাবি-দাওয়া উত্থাপনের বদলে যারা শ্রমিকদের ভুল পথ বেছে নেওয়ার উসকানি দিয়েছেন তারা শ্রমিকদের আদৌ কল্যাণ চান কিনা সন্দেহ রয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পের স্থিতিশীলতা ও শ্রমিকদের রুটি রুজির স্বার্থে এ ধরনের হঠকারিতা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর