বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বেনিন ট্র্যাজেডির শহীদদের জাতি ভোলেনি

মেজর জিল্লুর রহমান (অব.)

বেনিন ট্র্যাজেডির শহীদদের জাতি ভোলেনি

আফ্রিকার সিয়েরা লিয়নে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্য ছুটিতে দেশে ফেরার পথে বেনিনে বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়। ২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর সেনা কর্মকর্তাদের শাহাদাতবরণের এ ঘটনা সহকর্মীদের জন্য কোনো দিন ভোলার নয়। ২৬ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে সকাল ৯টার দিকে অপারেশন অফিস থেকে ক্যাপ্টেন তানভির ক্রন্দনরত ভাষায় ফোনে বলে, স্যার সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমাদের অফিসার যারা ছুটিতে বাংলাদেশে যাচ্ছিল সেই বিমান ক্র্যাশ করেছে বেনিনে। এ দুঃসংবাদ শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম, রক্ত হিম হয়ে গেল। তবু আমি তার মনোবল শক্ত করার জন্য ধমক দিয়ে বললাম কোথায় কোন রিউমার শুনেছ আর অমনি শিশুর মতো কান্না শুরু করেছ। তুমি না অফিসার! ভালো করে খোঁজ নাও আমি এখনই আসছি। দ্রুত ছুটে গেলাম অপারেশন অফিসে। বিমান দুর্ঘটনার খবর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর পাকিস্তান ব্যাটালিয়ন থেকে আমাদের নিশ্চিত করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে বেনিনের কটনৌ বিমানবন্দরে বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। আমি বেনিনে তদন্ত করতে গিয়ে দেখি রানওয়ের শেষ মাথায় বিধ্বস্ত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ধ্বংসাবশেষের কিছু আর আটলান্টিকের লাল বালুর বিচে কিছু অংশ পড়ে আছে। ব্যানবাট কমান্ডার কর্নেল ফজলু অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ছিলেন। ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে সিনিয়র ছিলেন লে. কর্নেল জি এম জামাত এবং আমি। সেনা নিয়ম অনুযায়ী আমরা ত্বরিতগতিতে সেনা সদর হেডকোয়ার্টারসহ অন্য সব সংস্থায় মেসেজ দেওয়া, যোগাযোগ করা, খোঁজখবর নিতে থাকলাম। ব্যানবাট কমান্ডারও খবর শুনে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন হাসপাতাল থেকে। সভা করে করণীয় ঠিক করতে আমরা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। এভাবে ২৬ তারিখ চলে গেল। ২৭ তারিখ সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার শফিক তার এক স্টাফ অফিসার নিয়ে ফোর্স হেডকোয়ার্টারে চলে গেলেন। আমরা গায়েবানা জানাজা নামাজ পড়লাম। জানাজায় স্থানীয় সব পদস্থ কর্মকর্তারা শরিক হলেন, প্যারামাউন্ট চিফ, রেসিডেন্স মিনিস্টার, সেক্রেটারি সবাই উপস্থিত ছিলেন। জানাজায় কমান্ডার কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তিনি বিলাপ করে বলতে লাগলেন একটা মহাযুদ্ধে এত অফিসার নিহত হয় না! আমি জাতিকে কি কৈফিয়ত্ দেব? জানাজা শেষে আমি, কমান্ডার ফজলু, লে. কর্নেল জামাত, ক্যাপ্টেন ইমরান, ক্যাপ্টেন ইরফান, ওয়ারেন্ট অফিসার মহিউদ্দিন, সার্জেন্ট আনোয়ার হেলিকপ্টারে করে ফ্রি টাউনের হোটেল মামিয়োকেতে ফোর্স হেডকোয়ার্টারে হাজির হলাম। সব বাংলাদেশি অফিসারের চোখে-মুখে বিষাদের কালো মেঘ। কেউ কথা বলছে না, বাকরুদ্ধ সবাই। কথা বলতে ভুলে গেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ফোর্স কমান্ডার পাকিস্তানি জেনারেল সাজ্জাদ আকরাম তার স্টাফ ও আমাদের নিয়ে বিমান দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে মিটিং করলেন। আমি শহীদ সৈন্যদের লাশ আনার জন্য দ্রুত বেনিনে যাওয়ার তাগিদ দিলাম। বললাম, সহকর্মীদের লাশ আনতে এখনই বেনিন যেতে হবে। সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। লাশ পচে গেলে শনাক্ত করতে জটিলতার সৃষ্টি হবে। এই প্রস্তাবে সবাই যুক্তি খুঁজে পেল। ফোর্স কমান্ডার আদেশ দিলেন বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন যা যা চায় সবই যেন পায়। আমাদের বিশেষ একটা বিমান দেওয়া হলো ফোর্স হেডকোয়ার্টার থেকে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে রাতে পৌঁছলাম বেনিনের কটনৌ বিমানবন্দরে। সেখান থেকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় পাঁচ তারকা হোটেল নভোটেলে। হোটেলে হাত-মুখ ধুয়েই আমরা ব্রিফিংয়ে গেলাম। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিল বেনিনের পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী। রাখে আল্লাহ মারে কে। একজন বিমান যাত্রী ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যান। তিনি ছিলেন জাতিসংঘের বেসামরিক স্টাফ, নাম নাবিল। বাংলাদেশের ১৫ সেনা অফিসারসহ প্রায় ৩০০ যাত্রী মারা গেছে। বিভিন্ন স্থানে লাশ ছড়ানো-ছিটানো আছে। বেনিন কর্তৃপক্ষ রাতে বিশ্রাম নিয়ে সকাল বেলায় লাশ শনাক্ত করার প্রস্তাব করেন। আমরা বললাম আমরা এখনই যাব, আমাদের বিশ্রাম হবে না সহকর্মীদের সত্কার না করা পর্যন্ত। আমাদের দাবি মতো তারা রাতেই আমাদের গাড়ি ও গাইড দেয়। বেনিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শর্ত দিলেন মস্তকবিহীন কোনো লাশ দেওয়া হবে না। শনাক্ত করতে না পারলে কোনো লাশ দেওয়া যাবে না। শনাক্ত হস্তান্তর দলিল সমাপ্ত করার পরই কেবল লাশ কফিনে বাক্সবন্দী করা যাবে। বেনিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহীয়সী মহিলা সাধারণ একজন নাগরিকের মতো আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন। তিনি অনেক কষ্ট করেছেন আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। তিনি জানালেন একসময় তিনি বাংলাদেশে ব্র্যাকে চাকরি করেছেন। প্রথম সাক্ষাতেই বললেন লাশ হস্তান্তরে যখনই কোনো অসুবিধা হবে আমাকে কল করবেন।

রাতে হাসপাতালের বাণিজ্যিক লাশ সংরক্ষণ হিমঘর ঘুরে সব লাশ শনাক্ত করে এক জায়গায় করলাম। লাশ সংরক্ষণ ঘর ওই দেশে একটা লাভবান ব্যবসা, আধুনিক সাজসজ্জায় নয়নাভিরাম অগণিত লাশ সংরক্ষণ ঘর রাস্তার দুই ধারে দেখা যায়। শেষ রাতে হোটেলে ফিরলাম। কারও পা চলছে না, খাবার নেই পেটে, শক্তি নেই মনে। হোটেলের সব স্টাফ ঘুমে। একজনকে ডেকে আনলাম, জানাল রাত ১২টার পর খাবার রাখা হয় না। রাতে শসা টমেটো ডিম সিদ্ধ করে সালাদ দিল। তাই নাকে-মুখে দিয়ে বিছানায় গেলাম। দুই ঘণ্টা পর আবার হাসপাতালে ছুটেছি দলিল-দস্তাবেজ ঠিক করে লাশ কফিনে ঢুকাতে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ফ্রান্স দূতাবাস সে দেশের রাষ্ট্রদূতকে। তিনি স্বয়ং নিজে আমাদের সব কফিন বক্স হাতে টেনে সাহায্য করছিলেন। আমাদের রাষ্ট্রদূতদের জন্য অনেক শিক্ষণীয় অনুকরণীয় মানবসেবা তিনি প্রদর্শন করলেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশি সেনাদের অসাধারণ ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রতি সম্মানস্বরূপ লাশের প্যাকেট, আধুনিক কফিন বক্স ফ্রান্স অ্যাম্বাসি সরবরাহ করেছিল।

লাশ হস্তান্তরে জটিলতা দেখা দিলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কল করার সঙ্গে সঙ্গেই সব কাজ ফেলে তিনি ছুটে আসতেন আমাদের কাছে, সমাধান দিয়ে আবার কাজে ফিরে যান। আমাদের মতো অহেতুক প্রটোকল তাদের নেই। একজন স্টাফ সঙ্গে কোনো পুলিশও নেই। লাশের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কটনৌ এয়ারপোর্টে জানাজা পড়লাম। কটনৌ রানওয়েতে জাতিসংঘের বিশাল এক প্লেন এসে ল্যান্ড করল আমাদের সামনে, মনে হলো রানওয়ে পাতালে ঢুকে পড়ল। আমরা লাশ প্লেনে উঠিয়ে দিয়ে ফিরে যাব সিয়েরালিয়নে। চেষ্টা চালাচ্ছি যত তাড়াতাড়ি স্বজনের কাছে লাশ পৌঁছে দেওয়ার। রাশিয়ান পাইলট নেমেই বলল আমি বার ঘণ্টা ফ্লাই করে এসেছি হোটেলে যাব বিশ্রাম করতে। আমরা তাকে ঘিরে দাবি করলাম এখনই ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হবে। পাইলট তেলেবেগুনে জ্বলে ক্ষেপে বললেন আমি আর একটা প্লেন ক্রাশ করে তোমাদের মারতে পারব না। বিশ্রামের পর সন্ধ্যায় যাত্রা করব। লে. কর্নেল জামাত ঠাণ্ডা মাথার বিচক্ষণ বুদ্ধির অফিসার, তিনি বললেন জবরদস্তি কর না তাতে ক্ষতি হবে পাইলটের বিশ্রামের দরকার।

সৈনিকদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অফিসারদের মনের অবস্থাও হতাশাগ্রস্ত। সব মিলিয়ে বিদেশের মাটিতে এক শোকাতুর পরিবেশ। বেদনার কষ্টের দিন যেন ফুরাতে চায় না। বাংলাদেশ থেকে নতুন অফিসার পাঠিয়েছে, তারা যোগদান করায় পরিস্থিতির উন্নতি হতে লাগল। জ্যেষ্ঠ মেজর উপধিনায়ক হিসেবে মেজর ফয়সাল ও লজিস্টিক অফিসার মেজর সরদার ইকবাল আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন ব্যাটালিয়নের মনোবল পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক কর্মে ফিরিয়ে আনতে। প্রতিদিন মোটিবেশন ক্লাস সিনিয়র অফিসাররা নিত। কমান্ডার আমাকে কোরআন হাদিসের আলোকে মনোবল উজ্জীবিত করার বিষয় নিয়ে ক্লাসে আলোচনা করতে বলতেন। তাতেই সৈনিকদের মনোবল গড়তে ওষুধের মতো কাজ দিল।

শুরু হলো দুর্ঘটনার বিষয়ে জাতিসংঘ কর্তৃক কোর্ট অব ইনকোয়ারি (তদন্ত)। আমাকে এ তদন্তের চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। কমান্ডার কর্নেল জামাত আমাকে ডেকে নিয়ে বিশেষ ব্রিফ দিলেন। আমাকে চেয়ারম্যান করার উদ্দেশ্য আমাদের সব অফিসার যেন বীমার টাকা, জাতিসংঘের ও সেনাবাহিনীর সব আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে তার জোর সুপারিশ নিশ্চিত করা। আমার সঙ্গে মেজর আনিস, ক্যাপ্টেন তোফায়েল রাত-দিন এ তদন্তে কাজ করেছেন। তদন্ত দলের একঘেয়েমি কাটাতে গভীর রাতে কখনো লে. কর্নেল জামাত কখনো কর্নেল ফজলু অফিসে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতেন সঙ্গ দিতেন। কর্নেল ফজলু আমাদের পাশে কিছু সময় থাকতেন আইনকানুনে সূত্র ধরতে সাহায্য করতেন। লে. কর্নেল জামাত কিছু আইনের বই থেকে ধারা-উপধারা বিধিবিধান দেখিয়ে তা কোট করতে সাহায্য করতেন। তদন্ত দল কর্তৃক সব সুপারিশ জাতিসংঘ অক্ষরে অক্ষরে গ্রহণ করেছে।

বছর পাঁচেক আগে এক দিন রাত ১২টায় কল পেলাম বেনিন দিবসের অনুষ্ঠানে আমি বিশেষ অতিথি। সকালে অনুষ্ঠান। তখন বাজে রাত ১২টারও বেশি এ কেমন নিমন্ত্রণ। ভাবলাম কারও কাছে হয়তো জেনেছে আমি বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি তাই হয়তো দেরিতে কল। সকালে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে দেখি মন্ত্রী মহোদয়, অনেক অবসরে যাওয়া সামরিক বেসামরিক আমলা, আমার ঘনিষ্ঠ দুজন জাদরেল জেনারেল উপস্থিত। শহীদ পরিবারের ছোট শিশু সন্তানও দেখলাম। অবাক হলাম যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যে ব্যাটালিয়নের ঘটনা তাদের কেউ নেই। যাদের দেখছি তারা এ বিমান দুর্ঘটনার কিছুই জানেন না। যাদের হূদয়ে রক্ত ঝরেছে অশ্রু ঝরেছে হাতের পাশে থাকতেও তাদের পাশ কাটিয়ে লৌকিকতা করা হচ্ছে মাত্র। শোক দিবসটির ভাবগাম্ভীর্য তুলে আনার চেয়ে কিছু স্পন্সর খুঁজে অনুষ্ঠান করার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। বিষয়টা নিয়ে আয়োজককে বলেছিলাম এমন দায়সারা অনুষ্ঠান শহীদের প্রতি অবমাননার শামিল। ওই অনুষ্ঠানে আমি শুনতে খারাপ শুনালেও বক্তৃতায় বললাম, এখানে যারা এসেছে হাতেগোনা কয়জন ভালোবাসার টানে, বাকিরা টেলিভিশনে মুখ দেখানোর জন্য এসেছে। আমি উপস্থিত হয়েছি কর্তব্যের টানে ব্যথার টানে। বছরে একবার মানুষ দেখানো স্মরণসভা করে তাদের কোনো উপকারে আসবে না। আমি বলেছিলাম মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আপনার কাছে আমার আকুতি, এ শহীদ পরিবারের আবাসনের ব্যবস্থাসংবলিত একটি প্রস্তাব আপনি কেবিনেট মিটিংয়ে উঠাবেন কিনা সেই অঙ্গীকার আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই। সেদিন আমার বক্তৃতায় হূদয়বিদারক লোমহর্ষ বিমান দুর্ঘটনার ধারাবাহিক বর্ণনা, আমার কান্না দেখে মন্ত্রী মহোদয়সহ সবার নয়ন অশ্রুজলে ছল ছল করছিল। আমাদের অহংকারের সেনাবাহিনী আজ বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছে এসব অফিসার ও তার পরিবারের সীমাহীন কষ্ট অসীম ত্যাগের বিনিময়ে। বেনিনে শাহাদাতবরণকারী কাপ্টেন আরিফ তালুকদার নবীন অফিসার ছিল। ক্যাপ্টেন আরিফ অসাধারণ মহতী গুণে বিকশিত একজন দৃষ্টান্তমূলক মানব দরদী অফিসার ছিলেন। সে তার নিজের অর্জিত ডলার দিয়ে সিয়েরালিয়নে গরিব অধ্যুষিত এলাকায় একটা স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে বাংলাদেশকে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো তুলে ধরেছে। সিয়েরালিয়নবাসী বাংলাদেশিদের বিপদের প্রকৃত বন্ধু বলে জানে। স্কুল, ব্রিজ, গির্জা, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা, বিনামূল্যে চিকিত্সা প্রদান, নিজ আহারের খাদ্য সঞ্চয় করে তা ক্ষুধার্তের মধ্যে বিতরণ, নিজেদের তহবিল থেকে দুস্থদের আর্থিক সাহায্য প্রদান, তাদের পুলিশ আর্মির সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান, অবকাঠামো নির্মাণে সাহায্য বাংলাদেশ আর্মি তাদের করে দিয়েছে। কৃষিকর্মের প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ থেকে ধান ও বিভিন্ন সবজির বীজ নিয়ে সে দেশে বপন করে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে সিয়েরালিয়ন তাদের দ্বিতীয় রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে বাংলাকে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের ও সেনাবাহিনীর সুনাম বৃদ্ধির পেছনে প্রতিটি সদস্যের নিরলস পরিশ্রম কঠোর শৃঙ্খলাবোধ অবদান রেখেছে।  ২৫ ডিসেম্বর শোকের দিনেও তৃপ্তির দিক, এ বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শহীদ পরিবারকে একটা করে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ পুনর্বাসন নীতি সেনাসদস্যদের ভবিষ্যতে আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করবে।

লেখক : সম্পাদক জি নিউজ ২৪ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর