রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ হোক

উন্নয়নের স্বার্থে আমলাতান্ত্রিকতার অবসান চাই

বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। তবে স্বীকার করতেই হবে, যে দ্রুত হারে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তা সম্ভব হচ্ছে না, আমলাতান্ত্রিকতার কারণে দেশের বিনিয়োগ নীতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দৃশ্যত আকর্ষণীয় বলে বিবেচিত হলেও লাল ফিতার ভয়ে তারা বাংলাদেশমুখী হতে প্রায়শই ভয় পান। বলা যায়, লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিটি সরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রম। সচিবালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি অফিস-আদালত, মন্ত্রণালয়, দফতর-অধিদফতর, ব্যাংক-বীমা, হাসপাতালসহ সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য জেঁকে বসেছে। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে স্বাভাবিক গতিতে কোথাও কাজ হয় না বললেই চলে। তদবির, প্রভাবশালীদের চাপ কিংবা আর্থিক লেনদেন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করেন না এটি একটি ওপেন সিক্রেট। এক কথায় বলতে গেলে ফাইল নড়ছে না সরকারি দফতরগুলোতে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সরকারি দফতরের অনুমোদন নিতে আসা লোকজন। দিনের পর দিন একই কাজে ঘুরে তাদের হয়রানি হতে হয়। তারপরও নথিতে অনুমোদন মেলে না লাল ফিতার দৌরাত্ম্য আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রকল্প হাতে নিলেও সরকারি অনুমোদন না পাওয়ায় সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখতে পারে না। আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কারণেই জাতীয় বাজেটে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয় তার এক উল্লেখযোগ্য অংশ বাস্তবায়িত হয় না। দেশের কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভের মুখ দেখা আর ডুমুরের ফুল দেখা সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা হয়, কল্পকথার ভূতেরা পিছন পানে হাটে। আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা জাতিকে ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে দিচ্ছে, লাল ফিতায় আটকে রাখছে ১৬ কোটি মানুষের ভবিষ্যেক। দেশের অগ্রগতি চাইলে প্রশাসনে গতিশীলতা সৃষ্টি করতেই হবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পারঙ্গমতা শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনেরও সাফল্যের চাবিকাঠি।  এ জন্য লাল ফিতা নামের নোংরা দৈত্যকে সামাল দিতেই হবে। আমলাতান্ত্রিক মনোভাবকে নিক্ষেপ করতে হবে ডাস্টবিনে।  সরকারি সব অফিসে গতি সৃষ্টির এটিই প্রকৃষ্ট উপায়।

সর্বশেষ খবর