শিরোনাম
রবিবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

দিন রাত বছর সব কিছুর নিয়ন্তা আল্লাহ

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

যেভাবেই ভাগ করা হোক না কেন দিন রাত সময় সব কিছুই নির্ধারিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায়। চন্দ্র, সূর্য সবকিছুই যেমন আল্লাহর সৃষ্টি তেমনি চান্দ্র বা সৌরবর্ষ— যেভাবেই সময়কে ভাগ করা হোক না কেন, সবকিছুর নিয়ন্তা মহান আল্লাহ। দিন-রাত সবকিছুতে যেমন মহান স্রষ্টা আল্লাহর মহিমা প্রকাশ পায়, বর্ষপরিক্রমাও মহান আল্লাহর মহিমা বিশেষ। সূরা আম্বিয়ার ৩৩নং আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘(আল্লাহ হচ্ছেন) তিনিই যিনি সৃষ্টি করেছেন রাত, দিন, চন্দ্র ও সূর্য। এদের প্রত্যেকেই পরিভ্রমণে নিয়োজিত রয়েছে নিজ নিজ কক্ষপথে, নিজস্ব গতিবেগ সহকারে।’ এ বিষয়ে সূরা ইয়াসিনের ৩৬নং আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘সূর্য কখনই চন্দ্রকে ধরতে পারবে না কিংবা রাত কখনো অতিক্রম করতে পারবে না দিনকে। প্রত্যেকেই পরিভ্রমণে নিয়োজিত নিজ নিজ কক্ষপথে, নিজস্ব গতিবেগ সহকারে।’

চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবীসহ সব গ্রহ-নক্ষত্র আল্লাহর নির্দেশে সৃষ্টি হয়েছে। মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে নিজের খলিফার মর্যাদা দিয়েছেন। আল্লাহ তার হাবিব রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বেছে নিয়েছেন মানুষের মধ্য থেকে। মানুষের উচিত আল্লাহ প্রদত্ত সময় অর্থাৎ দিন, রাত ও বছরকে তার নির্দেশিত পথে অতিবাহিত করা। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সূরায় এ বিষয়ে গাইডলাইন রয়েছে। সূরা ফাতেহায় সরল পথ পাওয়ার জন্য এবং বিপথগামীদের পথ থেকে রক্ষা পাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সূরার ৫-৭ আয়াতে আছে, ‘তুমি আমাদের সরল পথ দেখাও, তাদের পথ যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, তাদের পথ নয়— যারা ক্রোধ নিপতিত ও পথভ্রষ্ট।’ মানব জাতির সবারই আল্লাহর রহমত যে পথে সেই পথ অনুসরণ করা উচিত। দ্বিতীয় সূরা বাকারার তৃতীয় আয়াতে রয়েছে, ‘সৎ জীবিকা থেকে ব্যয় করার আদেশ সৃষ্টিকর্তার।’ এ ব্যাপারটি প্রত্যেক মানুষ মেনে চললে পৃথিবীতে একটি সুষম সমাজ গড়ে উঠবে। সম্পদ বণ্টনে ভারসাম্য হবে। অসৎ উপার্জন থেকে মানুষ বিরত থাকলে পৃথিবীতে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। ৪২নং আয়াতে রয়েছে, ‘মিথ্যার সঙ্গে সত্য না মিশিয়ে ফেলার আদেশ এবং জেনেশুনে সত্য গোপন না করার কথা।’ পবিত্র কোরআনের এই ঐশী শিক্ষার সফল বাস্তবায়ন ও চর্চা মানুষকে সঠিক পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করবে এমনটি কাঙ্ক্ষিত। ৪৪নং আয়াতেই রয়েছে, ‘তোমরা কি মানুষকে ভালো কাজের কথা বল আর নিজেরা ভুলে থাক, আবার কেতাবও পড়? তবুও কি তোমরা বুঝবে না?’ অর্থাৎ পবিত্র কোরআন পাঠ করলে ও উপদেশ দিলে হবে না, এর থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তিজীবনে সৎ, সুন্দর হয়ে অন্যদের জন্য উদাহরণ হতে হবে। ৬০নং আয়াতেই রয়েছে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি না করার উপদেশ। ৮৩নং আয়াতে ‘এক সৃষ্টিকর্তার ইবাদতের পাশাপাশি শিক্ষা রয়েছে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিনদের প্রতি সদয় হওয়ার আদেশ, মানুষের সঙ্গে সত্ভাবে কথা বলার আদেশ।’ পবিত্র কোরআনে সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষকে যেভাবে চলার উপদেশ দিয়েছেন সেভাবে চলার মধ্যে রয়েছে সত্যিকারের জাগতিক ও আখেরাতের শান্তি।  আল্লাহ আমাদের আগামী দিনগুলো, বিশেষ করে নতুন বছরের প্রতিটি দিন তার নির্দেশিত পথে চলার তৌফিক দান করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর