সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

রসুল (সা.) ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী

হাফেজ মোহাম্মাদ ওমর ফারুক

রসুল (সা.) ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী

আয়েশা (রা.) বলেন : রসুল (সা.) সুমধুর ভাষার অধিকারী ছিলেন। কোনো সময় রুঢ় ভাষায় কথা বলতেন না। এক ইহুদির কূপ থেকে পানি তুলতে গিয়ে রশি ছিঁড়ে বালতি পড়ে যাওয়ায় থাপ্পড় খেয়েছেন। তবুও কোনো প্রতিবাদ করেননি। তিনি ছিলেন বিনয়ের প্রতীক। তিনি নিজের ঘোর শত্রুর সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করতেন।

তায়েফ গোত্রের যুবকদের নৃশংস নির্যাতনের পরও রসুল (সা.) তাদের ওপর কোনো ধরনের বদ দোয়া করেননি। যদিও একজন ফেরেস্তা বলেছেন, ‘হে আল্লাহর রসুল আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমি তয়েফবাসীদের আমার পাখার দ্বারা ধ্বংস করে দেব।’ কিন্তু দয়ার নবী বললেন, ‘আমি তো দুনিয়াবাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। তারা তো বোঝে না। বরং তুমি তাদের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে হেদায়েতের দোয়া কর।’ মহানবী (সা.) কতটা উদার এবং বিনয়ী ছিলেন এটি তারই প্রমাণ।

রসুল (সা.) মানুষের মাঝে কোনো পার্থক্য করতেন না। দাস-দাসীর সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করতেন। একবার তার এক খ্রিস্টান গোলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে রসুল (সা.) তাকে বারবার দেখতে যান এবং মাথার কাছে বসে থাকতেন। ওই গোলামটি খ্রিস্টান বলে তাকে দূরে ঠেলে দেননি। হুজুর (সা.)-এর চরিত্রের বিনয় ও নম্রতা দেখে সে মুসলমান হয়ে যায়। এমন কি যায়েদ বিন হাফেজ রসুল (সা.)-এর চরিত্র, বিনয় ও নম্রতার কারণেই নিজের পিতা-মাতাকে ছেড়ে তার সান্নিধ্যে থাকেন।  আয়েশা (রা.) বলেন : ‘রসুলের চরিত্রের বিনয় ও নম্রতার সাক্ষী হলো স্বয়ং কোরআন’। হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘রসুল (সা.) অত্যন্ত প্রশান্ত মনের অধিকারী ছিলেন। তাঁর কাছে কেউ এলে তিনি তাকে সমাদর করতেন। এমনকি নিজের ব্যবহৃত চাদর বিছিয়ে বসতে দিতেন।

মানুষের ব্যক্তি চরিত্রের মাধ্যমেই ঘোষিত হয় জীবনের গৌরব। যার পরশে জীবন ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয় এবং যার বদৌলতে মানুষ জনসমাজে শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। হুজুর (সা.)-এর উত্তম চরিত্র ও বিনয়ের কারণে অসংখ্য ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মুসলিম হয়েছে। তাঁর বিনয় ও নম্রতার কারণে চোর চুরি করা ছেড়ে দিয়েছে। ডাকাতরা মানুষের সম্পদের পাহারাদার হয়েছে। একমাত্র রসুলের উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে তৎকালীন আরবের যুব সমাজের মধ্যে একতা এসেছে এবং তারা চরিত্রবান হয়ে আদর্শ জীবন গড়েছে।

লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর